বৃহস্পতিবার ২৪ জুলাই, ২০২৫
সর্বশেষ:
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মীদের পোশাকে নতুন বিধিনিষেধ: নিষিদ্ধ ছোট হাতা ও লেগিং অধ্যাপক ড. এম জুবাইদুর রহমান ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি-এর চেয়ারম্যান নির্বাচিত গত অর্থ বছরে, বেপজা’র রপ্তানি ১৬.২২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি, নতুন কর্মসংস্থান ৩৩ হাজার<gwmw style="display:none;"></gwmw> বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থের প্রায় ৭৫% পাচার হয়েছে বাণিজ্য ভুল চালানের মাধ্যমে: বিআইবিএম সমীক্ষা ঐতিহাসিক জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথমবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ঢাবি চারুকলা অনুষদে সেমিনার ও শিল্পকর্ম প্রদর্শনী জুলাই মাসের ২১ দিনে বাংলাদেশ ১.৭০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়-এর একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম-এরশিক্ষার্থীদের ডিএসই পরিদর্শন মার্কিন ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ: বাংলাদেশের উৎপাদন খাতে অনিশ্চয়তা একিউআর পদ্ধতি ৬টি ইসলামী ব্যাংকের লুকানো খেলাপি ঋণের পরিমাণ আগের তুলনায় ৪ গুণ বেশি খুঁজে পেয়েছে

গত অর্থ বছরে, বেপজা’র রপ্তানি ১৬.২২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি, নতুন কর্মসংস্থান ৩৩ হাজার

ঢাকা, ২৩ জুলাই: বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা) সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১৬.২২ শতাংশ রপ্তানি প্রবৃদ্ধি এবং ৩৩,০০০ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সক্ষম হয়েছে। বেপজা পরিচালিত রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) এবং বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল রপ্তানি ও কর্মসংস্থান উভয় ক্ষেত্রেই উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।

রপ্তানি ও জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান:

২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেপজা-প্রশাসিত অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো থেকে ৮.২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ৭.০৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের তুলনায় ১৬.২২ শতাংশ বেশি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বেপজা মোট ১১৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে। ইপিজেডগুলোতে উৎপাদিত পণ্য বিশ্বের ১২০টিরও বেশি দেশে রপ্তানি করা হয়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জাতীয় রপ্তানিতে বেপজার অবদান ছিল ১৭.০৩ শতাংশ, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ছিল ১৫.৯ শতাংশ। এই সময়ে মোট জাতীয় রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৮.২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

কর্মসংস্থান বৃদ্ধি অব্যাহত:

বেপজা-প্রশাসিত অঞ্চলগুলোতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৫ সালের জুন মাস পর্যন্ত, ৮টি ইপিজেড এবং বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে মোট ৫,৩৩,৫২৭ জন বাংলাদেশি নাগরিক কর্মরত আছেন। ২০২৪ সালের জুন মাসে এই সংখ্যা ছিল ৫,০০,১১০ জন। বেপজা জানিয়েছে, নতুন প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু এবং বিদ্যমান শিল্পগুলির সম্প্রসারণের ফলেই কর্মসংস্থানে এই বৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে।

বিনিয়োগ পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা:

২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেপজার ইপিজেড এবং অর্থনৈতিক অঞ্চলের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো মূলধনী যন্ত্রপাতি, নির্মাণ সামগ্রী এবং অন্যান্য স্থায়ী সম্পদে (ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল ব্যতীত) ২৯২.৭৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। এই অঙ্কটি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ৩৫০.৯৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগের চেয়ে কিছুটা কম। বেপজা এই পরিস্থিতিকে বৈশ্বিক ও স্থানীয় সমন্বয়ের সাথে সম্পর্কিত একটি সাময়িক মন্দা হিসেবে দেখছে। কর্তৃপক্ষ আশাবাদী যে এই সময়ে যে ভিত্তি তৈরি হয়েছে, তা আগামী প্রান্তিকগুলোতে বিনিয়োগ পুনরুদ্ধারে সহায়তা করবে।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৩৩টি নতুন বিনিয়োগ চুক্তি স্বাক্ষর বেপজার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারীরা শিল্প ইউনিট স্থাপনের জন্য এই চুক্তিগুলো স্বাক্ষর করেছেন। এই চুক্তিগুলোর অধীনে মোট প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমাণ ৪৯৭.৪৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা প্রায় ৫৯, ৪০৮ জন বাংলাদেশি নাগরিকের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো তৈরি পোশাক, ইলেকট্রনিক্স, কৃষি-ভিত্তিক পণ্য, জুতা, চামড়ার পণ্য, প্যাকেজিং সামগ্রী, তাঁবু, পরচুলা, হালকা প্রকৌশল পণ্য, খেলনা এবং কম্পোজিট আইটেমসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য উৎপাদন করবে। আশা করা হচ্ছে, এই বিনিয়োগগুলো কার্যকর হলে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে প্রকৃত বিনিয়োগ প্রবাহ আরও ত্বরান্বিত হবে।

শিল্পের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:

বর্তমানে বেপজার অধীনে ৫৬৩টি শিল্প ইউনিট রয়েছে, যার মধ্যে ৪৫০টি চালু এবং ১১৩টি বাস্তবায়নাধীন। চালু শিল্প ইউনিটগুলির মধ্যে ৩৩ শতাংশ তৈরি পোশাক, ১৮ শতাংশ পোশাকের আনুষাঙ্গিক এবং ৯ শতাংশ টেক্সটাইল পণ্য উৎপাদন করে। বাকি ৪০ শতাংশ ইলেকট্রনিক্স ও চিকিৎসা সরঞ্জাম থেকে শুরু করে আসবাবপত্র এবং ফ্যাশন আনুষঙ্গিকসহ বিভিন্ন ধরণের পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি করে।

উল্লেখ্য, বেপজা বর্তমানে দেশজুড়ে ৮টি ইপিজেড এবং চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিচালনা করছে। এছাড়াও, আরও বেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যে যশোর ও পটুয়াখালীতে দুটি নতুন ইপিজেড স্থাপনের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। বেপজা আশা করছে আগামী বছরের মধ্যে এই জোনগুলোতে বিনিয়োগকারীদের জন্য প্লট বরাদ্দ শুরু করতে পারবে।