বুধবার ৩ ডিসেম্বর, ২০২৫
সর্বশেষ:
খালেদা জিয়াকে ভিভিআইপি ঘোষণার সিদ্ধান্ত ডিভাইস শিল্পের বিনিয়োগ সুরক্ষা দেবে সরকার : ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বাজারে আসছে নতুন ৫০০ টাকার নোট, বৃহস্পতিবার থেকেই পাওয়া যাবে জননিরাপত্তা জোরদারে ডিজিটাল ও কমিউনিটি কৌশল গ্রহণের তাগিদ বিশেষজ্ঞদের বাংলাদেশ আমদানি বন্ধ রাখায় বিপাকে ভারত, সীমান্তে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি ২ রুপিতে! দেশের অর্থনীতি কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় পৌঁছায়নি, কাজ করার সুযোগ আছে: বাণিজ্য সচিব অবৈধ মাছ ধরা বন্ধে বৈশ্বিক সহযোগিতা জরুরি: মৎস্য উপদেষ্টা বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর অনুকূল পরিবেশ তৈরির তাগিদ ইইউর শাহরুখ খানের মার্কশিট ভাইরাল: কোন বিষয়ে কত নম্বর পেয়েছিলেন বলিউড বাদশা?

অবৈধ মাছ ধরা বন্ধে বৈশ্বিক সহযোগিতা জরুরি: মৎস্য উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা:মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং অবৈধ, অপ্রকাশিত ও অনিয়ন্ত্রিত (আইইউইউ) মাছ ধরা—একটি দেশের পক্ষে এককভাবে মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। এজন্য আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতা জোরদার করা অত্যাবশ্যক। তিনি টেকসই সামুদ্রিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা, ব্লু ইকোনমি বাস্তবায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় বিজ্ঞানভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও সুশাসনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের দ্য পেনিনসুলা হোটেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস আয়োজিত চার দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘মেরিন ফিশারিজ অ্যান্ড ব্লু ইনোভেশনস: সেইফগার্ডিং ওশান হারমনি’ এর দ্বিতীয় দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রে দ্রুত হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা

মৎস্য উপদেষ্টা জানান, মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করলেও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে দায়িত্বশীল আহরণ, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, বিজ্ঞাননির্ভর সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং কার্যকর সুশাসন অপরিহার্য। তিনি উল্লেখ করেন যে ব্লু ইকোনমিকে জাতীয় অগ্রাধিকার হিসেবে চিহ্নিত করায় বিজ্ঞান, নীতি ও কমিউনিটি–ডেভেলপমেন্টের সমন্বয়ে টেকসই সামুদ্রিক ভবিষ্যৎ নির্মাণের সুযোগ তৈরি হয়েছে।

ড. ফ্রিটজফ নানসেন কর্মসূচির ২০২৫ সালের সামুদ্রিক জরিপের তথ্য তুলে ধরে উপদেষ্টা উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, গত সাত বছরে ছোট পেলাজিক মাছের মজুদ ১ লাখ ৫৮ হাজার টন থেকে কমে ৩৩ হাজার ৮১১ টনে নেমে এসেছে—হ্রাসের হার ৭৮.৬ শতাংশ।

তিনি সতর্ক করে বলেন, বড় শিকারী মাছ কমে যাওয়ায় জেলিফিশের পরিমাণ দ্রুত বাড়ছে, যা পরিবেশগত ভারসাম্যের জন্য বিপজ্জনক সংকেত। এসব ফলাফল বঙ্গোপসাগরের ইকোসিস্টেমে দ্রুত হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা স্পষ্ট করে।

ইলিশ রক্ষায় সমন্বিত উদ্যোগের তাগিদ

ফরিদা আখতার নীতিনির্ধারণে দেশীয় গবেষকদের গবেষণালব্ধ তথ্য সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে ব্যবহারের আহ্বান জানান। পাশাপাশি ইকোসিস্টেম সুরক্ষা, সমুদ্রভিত্তিক পরিকল্পনা এবং জলবায়ু–সহনশীল মৎস্য ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দেন।

তিনি ইলিশকে জাতীয় ও বৈশ্বিক ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, বিশ্বে ইলিশ আহরণে বাংলাদেশ শীর্ষে থাকলেও এই সম্পদ এখন হুমকির মুখে। সাগরের প্রতিটি স্তরে ইলিশ রক্ষায় সমন্বিত উদ্যোগ এখন সময়ের দাবি।

অন্যান্য বক্তারা

সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। প্লেনারি সেশনে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব পোর্টসমাউথের বিজনেস স্কুলের প্রফেসর ড. পিয়ের ফাইলার ‘গ্লোবাল ব্লু ইকোনমি বাস্তবায়ন: চ্যালেঞ্জ, অভিজ্ঞতা এবং বাংলাদেশের জন্য কৌশলগত অন্তর্দৃষ্টি’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ, উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সের পরিচালক ড. শেখ আফতাব উদ্দিন আহমেদ। সম্মেলনে দেশ-বিদেশের গবেষক, বিজ্ঞানী, শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা অংশ নেন।