নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা : ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে আগামী শনিবার সকালে ঢাকায় আসছেন। এই গুরুত্বপূর্ণ সফরে তাকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা জানাবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র সচিব মো. আসাদ আলম সিয়াম পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
সচিব জানান, ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হবে। বিমানবন্দরে গার্ড অব অনার গ্রহণ করার পর তিনি সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তিনি সোমবার (২৪ নভেম্বর) ঢাকা ত্যাগ করবেন এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তাকে বিদায় জানাবেন।
সফরের লক্ষ্য ও আলোচ্য বিষয়সমূহ:
এই সফরের মূল লক্ষ্য হলো যোগাযোগ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করা।
- দ্বিপাক্ষিক বৈঠক: সফরকালে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করবেন। এরপর দুই দেশের মধ্যে প্রতিনিধি পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
- আলোচ্য ক্ষেত্র: বৈঠকে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, যোগাযোগ, শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগ, পর্যটন, সংস্কৃতি, যুব ও ক্রীড়া, শিল্পসহ দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করা হবে।
- বাংলাদেশের প্রস্তাব: পররাষ্ট্র সচিব জানান, বাংলাদেশ ভুটানকে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাণিজ্য, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, কৃষি, পর্যটন ও ক্রীড়াসহ কয়েকটি ক্ষেত্রে সহযোগিতার প্রস্তাব দিতে পারে। এছাড়া, ভুটানে বাণিজ্য সম্প্রসারণ, পানি ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশি পেশাদারদের নিয়োগে ভুটান সরকারের সহযোগিতা চাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক বিষয়গুলোও আলোচনায় আসতে পারে।
সম্ভাব্য সমঝোতা স্মারক:
পররাষ্ট্র সচিব আরও জানান, বৈঠক শেষে ভুটানের সঙ্গে তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই বিষয়গুলো হলো:
- আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ।
- ভুটানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ।
- কৃষি সহযোগিতা। তবে বিষয়গুলো এখনো আলোচনাধীন রয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান এবং প্রধানমন্ত্রী তোবগে তখনই তা আন্তরিকভাবে গ্রহণ করেন।