সোমবার ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
সর্বশেষ:
বাংলাদেশে আসছে ইন্টারঅপারেবল ইনস্ট্যান্ট পেমেন্ট সিস্টেম: গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর<gwmw style="display:none;"></gwmw> জার্মান কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে টেকসই দক্ষতা উন্নয়ন ও উদ্ভাবনে অবদান রাখছে: আঞ্জা কেরস্টেন, ডেপুটি হেড অব মিশন পোশাক খাতের ব্যবসায়ীরা জামায়াত আমীরের সঙ্গে বৈঠক, শিল্পে স্থিতিশীলতার জন্য সহযোগিতা কামনা বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামে ডলার কিনে বাজার স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করছে বিজিএমইএ-ইউএসটিআর বৈঠক অনুষ্ঠিত: দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, পাল্টা শুল্ক নিয়ে আলোচনা কর্মক্ষেত্রে আঘাতজনিত ক্ষতিপূরণ প্রদান শুরু করলো বেপজা ঢাকায় বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে ‘সাউথ এশিয়া ট্রেড ফেয়ার’ নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী ন্যাযতা যাচাইয়ে আইক্যাব ও এফআরসির মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ পিছিয়ে দেওয়ার অবস্থানে নেই বাংলাদেশ: ড. আনিসুজ্জামান

বিজিএমইএ-ইউএসটিআর বৈঠক অনুষ্ঠিত: দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, পাল্টা শুল্ক নিয়ে আলোচনা

আজ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এর একটি প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) ব্রেন্ডন লিঞ্চের নেতৃত্বাধীন মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সঙ্গে এক ফলপ্রসূ বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। গুলশানে চিফ অফ মিশন রেসিডেন্সে এই গুরুত্বপূর্ণ সভার আয়োজন করে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস।

বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের নেতৃত্বে বিজিএমইএ প্রতিনিধিদলে আরও উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি রেজওয়ান সেলিম, পরিচালক ফয়সাল সামাদ, পরিচালক আবদুস সালাম এবং বিজিএমইএ স্ট্যান্ডিং কমিটি অন এফটিএ অ্যান্ড পিটিএ এর চেয়ারম্যান, লুৎফে এম আইয়ুব।

বৈঠকে মার্কিন প্রতিনিধিদলের অপর দুই সদস্য ছাড়াও ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন এবং লেবার অ্যাটাশে লীনা খান উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে মূলত বাংলাদেশ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানিতে পাল্টা শুল্ক হার কমানোর বিষয়টি এবং সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, “আমরা ইতিমধ্যেই ২০% ট্যারিফ সুবিধা অর্জন করেছি, যা একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। তবে, প্রকৃতপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানির ওপর গড় এমএফএন (Most Favored Nation) শুল্ক ১৬.৫% এবং এর সঙ্গে ২০% পাল্টা শুল্ক মিলিয়ে মোট শুল্কের পরিমান প্রায় ৩৬.৫%, যা বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। তিনি বেসরকারিখাতে সর্ববৃহৎ কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী খাত, পোশাক শিল্পের যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানির ধারা অব্যাহত রাখতে রাখতে শুল্ক আরও কমানোর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধির সদয় দৃষ্টি আকর্ষন করেন।

এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি অভিমত প্রকাশ করে বলেন, স্ট্যাকিং মেথড’ ব্যবহার করে অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে এই শুল্কের সমন্বয় করা যেতে পারে। এই কৌশলটি কেবল শুল্কের বোঝা কমাবে না, বরং মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা আরও বাড়িয়ে দেবে।”

আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের একটি নির্বাহী আদেশ নিয়েও কথা হয়, যা অনুসারে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানিকৃত পোশাকে যদি ২০% বা তার বেশি যুক্তরাষ্ট্রের কাঁচামাল ব্যবহৃত হয়, তবে সেই পণ্যের ওপর আরোপিত ২০% অতিরিক্ত শুল্ক থেকে আনুপাতিক হারে অব্যাহতি পাওয়া যাবে।

বিজিএমইএ নেতারা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন যে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প এই সুযোগকে কাজে লাগাতে অত্যন্ত আগ্রহী। তবে এর জন্য কোন প্রক্রিয়া বা ফর্মুলায় যুক্তরাষ্ট্রের কাঁচামাল ব্যবহারের মূল্যায়ন এবং ট্রেসেবিলিটি তা নিশ্চিত করা হবে, তা তারা জানতে চান। প্রত্যুত্তরে মার্কিন প্রতিনিধিদল জানান, ইউএস কাস্টমস বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে কাজ করছে। আশা করা যায় যে, নির্ধারিত সমযের মধ্যে এটি সম্পন্ন হবে।

বৈঠকে বাংলাদেশের শ্রম আইন ২০০৬-এর সংশোধনী প্রস্তাবনা নিয়েও আলোচনা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি বলেন যে, আর্জাতিক মানদন্ডের সাথে সংগতি বজায় রেখে বাংলাদেশে শ্রম আইন সংস্কার করা হবে, এটি অত্যন্ত প্রত্যাশিত। তিনি আইএলও এর গাইডলাইন অনুসরণ করে বাংলাদেশের শ্রম আইন ২০০৬-এর সংশোধনী করার পরামর্শ দেন।

এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান পোশাক শিল্পের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধিকে আশ্বস্ত করে বলেন, তার বোর্ড দায়িত্ব গ্রহনের পরপরই এ লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে। ইতিমধ্যে তার বোর্ড শ্রম সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ৮১ টি শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে সংলাপ করেছে।

তিনি বলেন, বিজিএমইএ বাংলাদেশের শ্রম আইন ২০০৬-এর সংশোধনী নিয়ে সকল স্টেকহোল্ডারদের সাথে অব্যাহতভাবে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এবং শিল্প ও কর্মসংস্থান সুরক্ষিত রাখতে দেশের বাস্তবতা, শিল্পের প্রেক্ষাপট, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা এবং বাস্তবায়ন যোগ্যতাকে গুরুত্ব দিয়ে সকল স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনাক্রমে শ্রম আইন সংশোধনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে।

দেশ ও শিল্পের ক্ষেত্রে যে ইতিবাচক পরিবর্তনগুলো ক্রমান্বয়ে সাধিত হচ্ছে, সেগুলোকে ইতিবাচকভাবে দেখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধিকে অনুরোধ জানান বিজিএমইএ সভাপতি ।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধিদল আলোচনায় সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশের পণ্য আমদানি বাড়িয়ে বানিজ্য ঘাটতি কমিয়ে বাংলাদেশের জন্য পাল্টা শুল্ক হার আরও কমানোর বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে সভার সমাপ্তি হয়।