রবিবার ২৪ আগস্ট, ২০২৫
সর্বশেষ:
স্পেসএক্স ছেড়ে এবার আর্থিক খাতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কাইরান কাজী বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের ৭০% আসে ১০ দেশ থেকে, বাড়ছে ঝুঁকি দুর্বল ব্যাংকে আটকা পড়েছে বিপিসি ও পেট্রোবাংলার ৩ হাজার কোটি টাকা পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি বিমান যোগাযোগে আগ্রহী বাংলাদেশ: বাণিজ্যমন্ত্রী সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদারে আত্মবিশ্বাসী সরকার: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জিরো ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল আইনত দন্ডনীয় বিমান টিকিটে এজেন্সির নাম এবং ভাড়া উল্লেখ করতে হবে: বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় গ্রাহক স্বার্থ রক্ষায় ৯টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের ৭০% আসে ১০ দেশ থেকে, বাড়ছে ঝুঁকি

কেন বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের ৭০% আসে ১০ দেশ থেকে, বাড়ছে ঝুঁকি

ঢাকা, ২৪ আগস্ট : বাংলাদেশের রপ্তানি খাত দীর্ঘদিন ধরে কয়েকটি নির্দিষ্ট দেশের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল। এর ফলে যেকোনো বড় অর্থনৈতিক সংকট বা কূটনৈতিক টানাপোড়েন সার্বিক রপ্তানিকে ঝুঁকিতে ফেলে দিতে পারে।

সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নিয়ে যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, তা এই ঝুঁকিরই প্রতিফলন।তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত কয়েক বছরে বাজার বৈচিত্র্যের আলোচনা চললেও নির্দিষ্ট বাজারনির্ভরতা কমেনি, বরং বেড়েছে।

বিশ্বের প্রায় ১৫০টি দেশে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি হলেও মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৭০ শতাংশই আসে মাত্র ১০টি দেশ থেকে। এই দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র এককভাবে শীর্ষস্থানে রয়েছে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) ছয়টি দেশসহ যুক্তরাজ্য, কানাডা ও জাপানও তালিকায় আছে।

কেন এই নির্ভরশীলতা?

বাণিজ্য বিশ্লেষকরা বলছেন, এর প্রধান কারণ হলো বাংলাদেশ যে পণ্যগুলো বেশি উৎপাদন করে, যেমন তৈরি পোশাক, সেগুলোর চাহিদা মূলত ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলোতেই বেশি। এছাড়া, রপ্তানিকারকদের অভ্যস্ততাও একটি বড় কারণ। অনেক ব্যবসায়ী দীর্ঘকাল ধরে নির্দিষ্ট কিছু ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করে আসছেন এবং তারা সেই সম্পর্ক থেকে সরে আসতে চান না।

ঝুঁকির নানা দিক: কোনো একটি দেশের ওপর অতিরিক্ত বাণিজ্যনির্ভরতা থাকলে সেই দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সমস্যা, অর্থনৈতিক মন্দা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো যেকোনো সংকটের প্রভাব সরাসরি রপ্তানির ওপর পড়ে। অতিমারি করোনা এবং পরবর্তী অর্থনৈতিক মন্দার কারণে ইউরোপ ও আমেরিকার মানুষের ভোগক্ষমতা কমে যাওয়ায় বাংলাদেশের রপ্তানিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এসব কারণে বিশেষজ্ঞরা পণ্য ও বাজার বৈচিত্র্য আনার ওপর জোর দিচ্ছেন।

শীর্ষ ১০ রপ্তানি গন্তব্য:

১. যুক্তরাষ্ট্র: একক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের প্রধান গন্তব্য। গত অর্থবছর দেশটিতে ৮৬৯ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা মোট রপ্তানির ১৮ শতাংশ। প্রধান পণ্য হলো ওভেন পোশাক।

২. জার্মানি: ইইউর এই দেশটি দ্বিতীয় প্রধান বাজার, যেখানে রপ্তানি হয়েছে ৫২৯ কোটি ডলারের পণ্য। এটি মোট রপ্তানির প্রায় ১১ শতাংশ। এখানে নিট পোশাকের চাহিদা বেশি।

৩. যুক্তরাজ্য: ব্রেক্সিটের পর যুক্তরাজ্যের অবস্থান তৃতীয়। গত অর্থবছর ৪৬২ কোটি ২৭ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা মোট রপ্তানি আয়ের ৯.৫৭ শতাংশ।

৪. স্পেন: বাংলাদেশের চতুর্থ শীর্ষ রপ্তানি বাজার স্পেন, যেখানে রপ্তানি আয় ৩৫৫ কোটি ৪৭ লাখ ডলার। এখানেও নিটওয়্যার পণ্যের চাহিদা বেশি।

৫. ফ্রান্স: ইইউর পঞ্চম বৃহত্তম বাজার ফ্রান্স। গত অর্থবছর ২৪২ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে।

৬. নেদারল্যান্ডস: ষষ্ঠ অবস্থানে থাকা নেদারল্যান্ডসে রপ্তানি হয়েছে ২৩৫ কোটি ৪২ লাখ ডলারের পণ্য, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ২২ শতাংশ বেশি।

৭. ইতালি: বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের সপ্তম প্রধান গন্তব্য। এখানে গত অর্থবছর ১৬৬ কোটি ৪৫ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যার প্রধান অংশ নিটওয়্যার।

৮. কানাডা: অষ্টম অবস্থানে থাকা এই দেশটিতে রপ্তানি হয়েছে ১৪৬ কোটি ৩৭ লাখ ডলারের পণ্য।

৯. জাপান: এশিয়ায় প্রথম এবং বিশ্বজুড়ে নবম অবস্থানে আছে জাপান। গত অর্থবছর ১৪১ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে দেশটিতে।

১০. বেলজিয়াম: বেলজিয়াম দশম বৃহত্তম বাজার। গত অর্থবছর দেশটিতে ৭৩ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। পাট ও পাটজাত পণ্যও এখানে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে যায়।