মঙ্গলবার ৪ নভেম্বর, ২০২৫
সর্বশেষ:
অনলাইন জুয়ার লেনদেন বন্ধে এমএফএস অপারেটরদের প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের জরুরি নির্দেশনা সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের (এসআইবিএল) ৯ মাসে ১৭০৪ কোটি টাকার রেকর্ড লোকসান! পোশাক শিল্পে নতুন দিগন্ত: মার্কিন তুলা ব্যবহারে শুল্ক ছাড়ের সুযোগ নিতে বিজিএমইএ-এর দ্রুত নির্দেশনা চাই বাংলাদেশে ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনে ১২টি প্রতিষ্ঠানের আবেদন জমা বাংলাদেশের রপ্তানি আয় মাসিক বেড়েছে, তবে গড় হিসেবে অক্টোবর ২০২৫-এ পতন হয়েছে অস্ত্র রপ্তানির লক্ষ্য: ‘ডিফেন্স ইকোনমিক জোন’ স্থাপনে জমি খুঁজছে বাংলাদেশ বড় ধরনের পরিবর্তনের প্রস্তাব: মন্ত্রীর পূর্ণ মর্যাদা পেতে পারেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর<gwmw style="display:none;"></gwmw> ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে অক্টোবরে রেমিট্যান্স ২.৫৬ বিলিয়ন ডলারে: গতি কমেছে আগের মাসের তুলনায় এসএমইখাতকেঅর্থনীতিরমূলচালিকাশক্তিতেরূপান্তরেরউদ্যোগ: ৪বৈঠকশেষেযুগান্তকারীসিদ্ধান্ত

পোশাক শিল্পে নতুন দিগন্ত: মার্কিন তুলা ব্যবহারে শুল্ক ছাড়ের সুযোগ নিতে বিজিএমইএ-এর দ্রুত নির্দেশনা চাই

ঢাকা : মার্কিন কাঁচামাল ব্যবহার করে তৈরি পোশাকের ওপর আরোপিত শুল্কে আনুপাতিক ছাড় পাওয়ার নতুন সুযোগ কাজে লাগাতে বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের তুলা রপ্তানিকারকদের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। এই সহযোগিতা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়াতে এবং দেশের পোশাক শিল্পকে আন্তর্জাতিক বাজারে আরও প্রতিযোগিতামূলক করতে সাহায্য করবে।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এবং কটন ইউএসএ (Cotton USA)-এর উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের মধ্যে আজ মঙ্গলবার (০৪ নভেম্বর) উত্তরা বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল নতুন মার্কিন শুল্ক সুবিধা কাজে লাগিয়ে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং দেশের বস্ত্র খাতে মার্কিন তুলার ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করা।

শুল্ক ছাড়ের সুযোগ ও স্পষ্টীকরণের তাগিদ সম্প্রতি ঘোষিত মার্কিন নির্বাহী আদেশ অনুসারে, বাংলাদেশে তৈরি পোশাক যদি ন্যূনতম ২০ শতাংশ মার্কিন-উৎসীয় কাঁচামাল (যেমন তুলা) ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা হয়, তবে রপ্তানিকারকরা নতুন অতিরিক্ত শুল্ক থেকে আনুপাতিক হারে অব্যাহতি পাবেন।

বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান এই সুযোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “এই নতুন শুল্ক ছাড় আমাদের শিল্পখাতের জন্য বিশাল সম্ভাবনা তৈরি করেছে, যা আমাদের পণ্যকে বিশ্ববাজারে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলবে।”

তবে তিনি উল্লেখ করেন, স্থানীয় স্পিনার ও পোশাক কারখানাগুলো ঠিক কোন প্রক্রিয়ায় এই সুবিধা লাভ করবে, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা এখনও বিজিএমইএ-এর হাতে নেই। তাই তিনি মার্কিন প্রতিনিধিদলকে অনুরোধ জানান, যেন তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে মার্কিন প্রশাসনের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় স্পষ্টীকরণ (clarification) এনে বিজিএমইএকে সরবরাহ করেন। এতে উদ্যোক্তারা কোনো বিলম্ব না করে শুল্ক সুবিধা গ্রহণের প্রস্তুতি নিতে পারবেন।

মার্কিন তুলা আমদানি দ্বিগুণ করার লক্ষ্য বর্তমানে বাংলাদেশ তার মোট আমদানিকৃত তুলার প্রায় ১০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে সংগ্রহ করে। বিজিএমইএ সভাপতি আস্থা প্রকাশ করে বলেন, দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন এবং সুচিন্তিত কৌশলগত পদক্ষেপ নেওয়া গেলে এই পরিমাণ দ্বিগুণ বা তিনগুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা সম্ভব।

তিনি মার্কিন তুলার উচ্চ গুণগত মান এবং তুলনামূলক সুবিধা নিয়ে যৌথ গবেষণা ও তথ্য আদান-প্রদানের উদ্যোগ নেওয়ার প্রস্তাব করেন। এতে দেশীয় স্পিনার ও প্রস্তুতকারকরা উৎসাহিত হবে এবং আমদানি বাড়বে। মার্কিন প্রতিনিধিদল এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে যৌথভাবে কাজ করার অঙ্গীকার করে।

বাণিজ্যিক জটিলতা নিরসনে সহযোগিতা বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে বিদ্যমান কিছু সমস্যা নিয়েও আলোচনা হয়। মার্কিন প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে তুলা রপ্তানির ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক ডকুমেন্টেশন প্রস্তুতে কিছু প্রতিবন্ধকতা ও জটিলতা দেখা দিচ্ছে বলে উল্লেখ করে এবং এ বিষয়ে বিজিএমইএ-এর সহযোগিতা কামনা করে।

এর প্রেক্ষিতে বিজিএমইএ সভাপতি মার্কিন প্রতিনিধিদের অনুরোধ করেন যেন তারা নির্দিষ্ট বিষয়গুলো লিখিত আকারে বিজিএমইএকে জানান। তিনি আশ্বাস দেন, বিজিএমইএ দ্রুত এই জটিলতাগুলো নিরসনের জন্য বিষয়টি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে যথাযথভাবে উপস্থাপন করবে।

কটন কাউন্সিল ইন্টারন্যাশনাল-এর প্রতিনিধিরা বলেন, টেকসই গুণাবলী, নির্ভরযোগ্যতা এবং উচ্চমানের জন্য মার্কিন তুলা সুপরিচিত। তারা বিশ্বাস করেন, মার্কিন তুলা ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা তাদের পণ্যের মান আরও উন্নত করতে পারবে এবং মার্কিন বাজারে শুল্ক সুবিধা কাজে লাগিয়ে নিজেদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে পারবে।

বিজিএমইএ এবং মার্কিন তুলা রপ্তানিকারকদের প্রতিনিধিদল উভয় পক্ষই ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব ও পারস্পরিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।