নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা :
বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া এবং এটি সম্পন্ন করতে সাধারণত চার থেকে পাঁচ বছর সময় প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড.1 আহসান এইচ মনসুর।
বুধবার বিকেলে সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে গভর্নর এসব কথা বলেন।
পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ড. মনসুর বলেন, “এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। সরকার অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে।” তিনি জানান, ইতোমধ্যে অসংখ্য মামলা দায়ের করা হয়েছে, তবে সুনির্দিষ্ট সংখ্যাটি এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়।
অর্থ ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে গভর্নর সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “লন্ডনে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে যে মামলা চলছে, সেটি দ্রুত নিষ্পত্তি হলে আমরা খুব ভাগ্যবান হব। যেহেতু অভিযুক্ত পক্ষ মামলায় লড়েনি (did not contest), তাই তারা ‘ডিফল্ট’ হিসেবে হেরে গেছে।2 সেখানে অর্থ উদ্ধারের একটি বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে।” তবে এই অর্থ ঠিক কবে নাগাদ দেশে আসবে, সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি তিনি। তিনি ধারণা করছেন, এটি আগামী ফেব্রুয়ারি, মার্চ কিংবা জুন মাস নাগাদ হতে পারে।
ড. মনসুর আরও জানান, অন্যান্য মামলার ক্ষেত্রে বিদেশে আইনি প্রক্রিয়া অত্যন্ত দীর্ঘ এবং সেগুলো আনুষ্ঠানিক আবেদনের ওপর নির্ভরশীল। এসব ক্ষেত্রে প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার সুযোগ সীমিত।
এস আলম গ্রুপের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে গভর্নর জানান, এই শিল্পগোষ্ঠীটি বর্তমানে আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে।3 তিনি বলেন, “এস আলম গ্রুপ আমাদের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনে আন্তর্জাতিক সালিশি (arbitration) মামলা দায়ের করেছে।4 এটি যেন ‘চোরের মার বড় গলা’র মতো অবস্থা। আমরা অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে এই মামলার মোকাবিলা করব।”
গভর্নর স্পষ্ট করেন যে, বিদেশে পাচার হওয়া সম্পদ জব্দের কাজ দ্রুত চললেও প্রকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে ধৈর্য ধরতে হবে এবং আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই যেতে হবে।