সরকারি দপ্তরে এআই নীতি প্রণয়নে কাজ করছে বাংলাদেশ: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব
আইসিটি বিভাগ ও হুয়াওয়ের উদ্যোগে ‘বাংলাদেশ টেককানেক্ট ২০২৫’ সম্মেলন
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা: সরকারি দপ্তরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ব্যবহারের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নে বাংলাদেশ সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়-এর দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
গতকাল বুধবার (২৬ নভেম্বর) ঢাকায় একটি হোটেলে আইসিটি বিভাগ ও প্রযুক্তি জায়ান্ট হুয়াওয়ে-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ টেককানেক্ট সামিট ২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই তথ্য জানান।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, “বাংলাদেশ কয়েক বছর আগেই তার ডিজিটাল রূপান্তরের যাত্রা শুরু করেছে, এবং সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আমরা আমাদের গতি ও দিকনির্দেশনা আরও সুস্পষ্টভাবে পুনর্ব্যক্ত করেছি।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমাদের অংশীদারদের সহায়তায় আমরা ডিজিটাল সেবার মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের আরও ক্ষমতায়ন করতে চাই।”
সমন্বয়ের অভাব ও নতুন উদ্যোগ
বিশেষ সহকারী উল্লেখ করেন যে সরকারি সংস্থা এবং মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে ডিজিটাল রূপান্তরের সমন্বয়ের অভাবে এখনও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এই সমন্বয় ও মসৃণ ডিজিটাল পরিবর্তনের জন্য একটি কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষণ সেল গঠনের কাজ করছে।
উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির গুরুত্ব
‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উৎকর্ষে সমৃদ্ধ, উদ্ভাবনী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গঠন’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আয়োজিত এই সম্মেলনটির লক্ষ্য ছিল দেশকে একটি উদ্ভাবন-নেতৃত্বাধীন ডিজিটাল অর্থনীতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। এই প্ল্যাটফর্মে নীতিনির্ধারক, শিল্পনেতা ও উদ্ভাবকরা এআই, ৫জি, ক্লাউড কম্পিউটিং, আইওটি ও ফিনটেক-এর মতো উদীয়মান প্রযুক্তিগুলো কীভাবে প্রশাসন, ব্যবসা এবং দৈনন্দিন জীবনে মৌলিক পরিবর্তন আনছে, তা নিয়ে আলোচনা করেন।
সম্মেলনে আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মামুনুর রশিদ ভূঞা তাদের কৌশলগত কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। এছাড়াও জিএসএমএ এশিয়া প্যাসিফিকের প্রধান জুলিয়ান গোরম্যান ডিজিটাল বিভাজন দূরীকরণের বিষয়ে তার মতামত তুলে ধরেন। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি)-এর নির্বাহী পরিচালক মো. আবু সাঈদ এন্টারপ্রাইজ ডিজিটাল রূপান্তর বিষয়ে মূল প্রবন্ধ পেশ করেন।
আইসিটি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরীর পরিচালনায় একটি প্যানেল আলোচনাও অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি), মোবাইল অপারেটর এবং হুয়াওয়ে সাউথ এশিয়া অঞ্চলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেসন উ সহ অন্যান্যরা দেশের ডিজিটাল অবকাঠামো জোরদারকরণ ও প্রযুক্তির ব্যবহার দ্রুত করার কৌশল নিয়ে আলোচনা করেন।
আইসিটি বিভাগ ও হুয়াওয়ের অংশীদারিত্ব
‘টেককানেক্ট ২০২৫’ হল আইসিটি বিভাগ এবং হুয়াওয়ের মধ্যে চলমান অংশীদারিত্বের একটি অংশ। উদ্ভাবন, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং আইসিটি ইকোসিস্টেম উন্নয়নে সহযোগিতা বাড়াতে তারা ২০২৫ সালের মার্চ মাসে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছিল।
গত ২৭ বছর ধরে বাংলাদেশে কর্মরত হুয়াওয়ে সরকারি সংস্থা, টেলিকম অপারেটর এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ধারাবাহিক সহযোগিতার মাধ্যমে ‘সম্পূর্ণ সংযুক্ত ও বুদ্ধিবৃত্তিক বাংলাদেশ’ গড়ার জাতীয় আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।
আপনি ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব-এর টেলিকম খাতের নীতিমালা নিয়ে আলোচনার একটি ভিডিও দেখতে পারেন