ঢাকা : প্রায় ১২ ঘণ্টার দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর বেসরকারি খাতের শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি তাদের ভেরিফায়েড অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেয়েছে।
শুক্রবার ভোরে পেজটি হ্যাক হওয়ার পর বিকেল ৪টার দিকে তা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়।ব্যাংকের জনসংযোগ বিভাগ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে, দিনভর ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে পেজের নিয়ন্ত্রণ ফেরত নেওয়া হয়। বর্তমানে পেজটি স্বাভাবিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
ব্যাংকের জনসংযোগ বিভাগের প্রধান নজরুল ইসলাম বলেন, “ভোরে পেজটি হ্যাক হয়। দিনভর ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের পর নিয়ন্ত্রণ ফেরত পাওয়া যায়। বর্তমানে পেজটি স্বাভাবিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে।”
হ্যাকারদের বার্তা ও এস আলম-যোগ:পেজটি হ্যাক হওয়ার পর ‘টিম এমএস ৪৭ওএক্স’ (Team MS 47OX) নামে একটি হ্যাকার গ্রুপ প্রোফাইল ও কভার ছবি পরিবর্তন করে নিজেদের লোগো যুক্ত করে।
জানা যায়, হ্যাকার গ্রুপটি একটি পোস্টে এস আলম-সংশ্লিষ্ট এবং চাকরিচ্যুত কর্মীদের পুনর্বহালের দাবি জানায়। যদিও কিছু সময় পরই সেই পোস্টটি মুছে ফেলা হয়।ব্যাংকের অভ্যন্তরীন সংকটের প্রেক্ষাপটসাম্প্রতিক সময়ে ইসলামী ব্যাংকের অভ্যন্তরে ব্যাপক রদবদল ও কার্যক্রমের প্রেক্ষাপটে এই হ্যাকিংয়ের ঘটনাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।
ব্যাংকটিতে ইতোমধ্যে ৪০০-এরও বেশি কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং প্রায় ৫,০০০ কর্মকর্তাকে ওএসডি (Officer on Special Duty) করা হয়েছে।হ্যাকিংয়ের সময় এবং হ্যাকারদের সুনির্দিষ্ট দাবির কারণে ধারণা করা হচ্ছে যে, এই সাইবার আক্রমণের সঙ্গে ব্যাংকের চলমান অভ্যন্তরীন অস্থিরতা এবং কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিস্থিতির একটি যোগসূত্র রয়েছে।
এস আলমের সময়ে অনিয়ম ও ব্যয় বৃদ্ধিএদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংককে পরিচালনা ব্যয় কমানো এবং বড় অঙ্কের খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছে।বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে দেখা যায়, এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকাকালীন গত ৭ বছরে ব্যাংকটির পরিচালনা ব্যয় ব্যাপক হারে বেড়ে যায়। এর ফলে ব্যাংকের মুনাফার বদলে লোকসান হয় বলে সূত্র জানায়।
ইসলামী ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এস আলম-সংশ্লিষ্ট এই ৭ বছরে ৮,৩৪০ জনেরও বেশি কর্মীকে অনৈতিকভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। এই অদক্ষ কর্মীদের পেছনে প্রায় ১০,০০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলে ওই কর্মকর্তা জানান। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব নিয়োগ পর্যালোচনার জন্য ইসলামী ব্যাংককে নির্দেশ দিয়েছে।