ঢাকা : সৌদি আরবের জাতীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থা সৌদিয়া এয়ারলাইন্স শুক্রবার ঢাকায় তাদের নতুন অত্যাধুনিক সিটি টিকিটিং অফিস আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছে। গুলশান এভিনিউ-এর সিম্পলট্রি আটালিকার ১৬তম তলায় অবস্থিত এই অফিসটি বাংলাদেশে সৌদিয়ার কার্যক্রমে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক চিহ্নিত করল।
ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ড. আবদুল্লাহ যাফের এইচ. বিন আবিয়াহ ফিতা কেটে অফিসটির উদ্বোধন করেন।
এ সময় সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের আন্তর্জাতিক অঞ্চলসমূহের সহকারী ভাইস প্রেসিডেন্ট মুসায়েদ আলমুসায়েদ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব ও পশ্চিম) ড. মো. নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
হজ্জ ও ওমরাহ যাত্রীদের সুবিধা বাড়বে: রাষ্ট্রদূত
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত ড. আবিয়াহ সৌদি আরব ও বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের গভীর সম্পর্ক তুলে ধরেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, এই নতুন সুবিধাটি ভ্রমণকারীদের, বিশেষ করে হজ্জ ও ওমরাহ যাত্রীদের জন্য ভ্রমণের সুবিধা বৃদ্ধি করবে এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যেকার সম্পর্ক আরও জোরদার করবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নজরুল ইসলাম সৌদিয়ার এই বিনিয়োগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “সৌদিয়া বাংলাদেশের বিমান চলাচল খাতে একটি বিশ্বস্ত অংশীদার। এই নতুন বিনিয়োগ ক্রমবর্ধমান ভ্রমণ চাহিদা পূরণে সহায়তা করবে এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে।”
বর্ধিত পরিসেবার প্রতিশ্রুতি
বাংলাদেশে সৌদিয়ার কান্ট্রি ম্যানেজার তারিক আলোয়াইদি জানান, ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে এয়ারলাইন্সটি ইতিমধ্যে তাদের ফ্লাইট সংখ্যা বাড়িয়েছে। তিনি বলেন, নতুন অফিসটি দ্রুত, আরামদায়ক এবং সহজলভ্য পরিষেবা প্রদানের প্রতি সৌদিয়ার প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
বাংলাদেশে সৌদিয়ার জেনারেল সেলস এজেন্টের (GSA) পক্ষ থেকে আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ উল্লেখ করেন যে, সৌদিয়া ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকা পর্যন্ত দীর্ঘ দূরত্বের ভ্রমণের জন্য পছন্দের বাহক হয়ে উঠেছে। একইসঙ্গে, তাদের স্টপওভার ভিসা কর্মসূচির মাধ্যমে ওমরাহ্ যাত্রীদের জন্য সুবিধাজনক বিকল্প সরবরাহ করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক মানের সুবিধা
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী নির্মিত গুলশানের এই নতুন অফিসটি বাংলাদেশে সৌদিয়ার সবচেয়ে উন্নত পরিষেবা কেন্দ্র। এতে সাধারণ যাত্রী, প্রিমিয়াম কেবিন গ্রাহক এবং আল-ফুরসান (AlFursan) ফ্রিকোয়েন্ট ফ্লায়ারদের জন্য আলাদা কাউন্টারের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও, এটিতে ট্রাভেল ট্রেড অংশীদারদের জন্য একটি মিটিং স্পেস এবং প্রশিক্ষণ ও সম্মেলন কক্ষও রয়েছে।
এই সম্প্রসারণের লক্ষ্য হলো পরিষেবা গ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি করা, অপেক্ষার সময় কমানো এবং যাত্রীদের সামগ্রিক অভিজ্ঞতা উন্নত করা, যেখানে ডিজিটাল পরিষেবাগুলিতে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হয়েছে।
সৌদিয়া কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নতুন অফিসের পাশাপাশি তারা ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেল এবং চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের বিদ্যমান টিকিটিং অফিসগুলোতে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।
উল্লেখ্য, এই শুভ উদ্বোধনটি বিশ্ব পর্যটন দিবস ২০২৫-এর সাথে একই দিনে অনুষ্ঠিত হলো, যা উমরাহ প্লাস-এর মতো উদ্যোগের মাধ্যমে সৌদি আরবের পর্যটন খাতকে তুলে ধরার প্রচেষ্টাকে আলোকপাত করে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ভ্রমণকারীরা আধ্যাত্মিক যাত্রার পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও বিনোদনমূলক স্থান ভ্রমণের সুযোগ পান।
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামাণিকও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।