সোমবার ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
সর্বশেষ:
টানা লোকসানে ডেসকো: দুই বছরে ৬৩০ কোটি টাকা ক্ষতি, ফের লভ্যাংশ বঞ্চিত বিনিয়োগকারীরা ডিসেম্বরের মধ্যে বিদেশি অপারেটরের হাতে যাচ্ছে তিন বন্দর টার্মিনাল: নৌ সচিব ট্রাম্পের এক ঘোষণায় ২ ট্রিলিয়ন ডলার বাজারমূলধন উধাও: যুক্তরাষ্ট্র পুঁজিবাজারে বড় পতন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য বিষয়ক দূতের বৈঠক মিরসরাই ইকোনমিক জোনসহ সব অর্থনৈতিক অঞ্চলে ট্রেন যোগাযোগ স্থাপনের উদ্যোগ জেপি মরগ্যান সিইও’র সতর্কবার্তা: ৬ মাস থেকে ২ বছরের মধ্যে মার্কিন শেয়ারবাজারে বড় ধস নামতে পারে বৈদেশিক মুদ্রা বাজার স্থিতিশীল রাখতে আরো ২০৮ কোটি ডলার কিনল বাংলাদেশ ব্যাংক সূদের হার কমানো ও রপ্তানি সহায়তা তহবিল বৃদ্ধির তাগিদ: গভর্নরের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের বৈঠক বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে এফবিসিসিআই‘র ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের বৈঠক

গ্রাহক স্বার্থ রক্ষায় ৯টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

ঢাকা, ২২: আগস্ট গ্রাহকদের আমানত সুরক্ষায় একটি বড় ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দেশের মোট ৩৫টি ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এনবিএফআই) মধ্যে নয়টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এই প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যাপক খেলাপি ঋণ এবং আর্থিক অব্যবস্থাপনার অভিযোগ রয়েছে।বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের শেষে দেশের পুরো আর্থিক খাতের মোট ২৫ হাজার ৮৯ কোটি টাকা খেলাপি ঋণের ৫২ শতাংশই এই নয়টি প্রতিষ্ঠানের।

বন্ধ হতে যাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, যে নয়টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে বন্ধ করে দেওয়ার জন্য প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে, সেগুলো হলো: এফএএস ফাইন্যান্স, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি) প্রিমিয়ার লিজিং ফারইস্ট ফাইন্যান্স, জিএসপি ফাইন্যান্স, প্রাইম ফাইন্যান্স, আভিভা ফাইন্যান্স, পিপল’স লিজিং, ইন্টারন্যাশনাল লিজিংএ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, “এই ৯টি প্রতিষ্ঠানকে লিকুইডেট করা হবে। সরকার নীতিগতভাবে এ বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে।” তিনি আরও জানান, সরকারের অনুমোদনের পর ‘ফাইন্যান্স কোম্পানি আইন-২০২৩’ অনুযায়ী আগামী মাস থেকেই এই প্রতিষ্ঠানগুলোর লিকুইডেশন (বন্ধ করে দেওয়া) প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।

আইনি প্রক্রিয়ায় লিকুইডেশন : নতুন আইনে বলা হয়েছে, কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান যদি আমানত, ঋণ বা ধার শোধ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা যাবে। গভর্নর মনসুর বলেন, “আমরা এটা করছি শুধু আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য। তাদের স্বার্থই আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার।” এই পুরো প্রক্রিয়াটি আইনি কাঠামোর মধ্যে সম্পন্ন হবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের জন্য একজন করে লিকুইডেটর (বন্ধের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি) নিয়োগ করবে।

‘লাল তালিকা’ এবং দুর্বল প্রতিষ্ঠান : জানুয়ারিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে দুর্বল হিসেবে চিহ্নিত করে একটি ‘লাল তালিকা’ তৈরি করে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল অনেক বেশি।

লাল তালিকায় থাকা ২০টি প্রতিষ্ঠান হলো: সিভিসি ফাইন্যান্স, বে লিজিং, ইসলামিক ফাইন্যান্স, মেরিডিয়ান ফাইন্যান্স, জিএসপি ফাইন্যান্স, হজ্জ ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল ফাইন্যান্স, আইআইডিএফসি, প্রিমিয়ার লিজিং, প্রাইম ফাইন্যান্স, উত্তরা ফাইন্যান্স, আভিভা ফাইন্যান্স, ফিনিক্স ফাইন্যান্স, পিপল’স লিজিং, ফার্স্ট ফাইন্যান্স, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, বিআইএফসি, ফারইস্ট ফাইন্যান্স এবং এফএএস ফাইন্যান্স।এই ২০টি প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে লাইসেন্স বাতিলের বিষয়ে তাদের অবস্থান জানতে চেয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

নোটিশের জবাবে যে ৯টি প্রতিষ্ঠান সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হয়েছে, সেগুলোকে প্রাথমিকভাবে বন্ধের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে।

গভর্নর জানান, “তাদের সব পরিকল্পনা গ্রহণযোগ্য ছিল না।”উল্লেখ্য, বেশিরভাগ অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা না থাকায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।