রবিবার ১২ অক্টোবর, ২০২৫
সর্বশেষ:
ট্রাম্পের এক ঘোষণায় ২ ট্রিলিয়ন ডলার বাজারমূলধন উধাও: যুক্তরাষ্ট্র পুঁজিবাজারে বড় পতন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য বিষয়ক দূতের বৈঠক মিরসরাই ইকোনমিক জোনসহ সব অর্থনৈতিক অঞ্চলে ট্রেন যোগাযোগ স্থাপনের উদ্যোগ জেপি মরগ্যান সিইও’র সতর্কবার্তা: ৬ মাস থেকে ২ বছরের মধ্যে মার্কিন শেয়ারবাজারে বড় ধস নামতে পারে বৈদেশিক মুদ্রা বাজার স্থিতিশীল রাখতে আরো ২০৮ কোটি ডলার কিনল বাংলাদেশ ব্যাংক সূদের হার কমানো ও রপ্তানি সহায়তা তহবিল বৃদ্ধির তাগিদ: গভর্নরের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের বৈঠক বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে এফবিসিসিআই‘র ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের বৈঠক ইসলামী ব্যাংকের ‘দখল করা শেয়ার’ প্রকৃত মালিকদের কাছে ফেরতের দাবি জানিয়ে ব্যবসায়ীদের আল্টিমেটাম সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য সুসংবাদ: ৬৫ হাজার প্রধান শিক্ষকেরা পাচ্ছেন ১০ম গ্রেড

প্রবাসীদের মর্যাদা রক্ষায় ১৫ দফা দাবি: বাস্তবায়ন না হলে অর্থনীতিতে অস্থিরতার শঙ্কা

ঢাকা: বাংলাদেশের প্রবাসী শ্রমিকদের একটি জোট গতকাল শনিবার সরকারের নীতিনির্ধারকদের প্রতি ১৫-দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে। প্রবাসীদের মর্যাদা ও অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই দাবিগুলো উত্থাপন করা হয়।

জোটটি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, এই দাবিগুলো পূরণে ব্যর্থ হলে প্রবাসী কর্মীদের আয় এবং জাতীয় অর্থনীতিতে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।

রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ই আর এফ) এ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের (NRBs) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ওপর জোর দেন।

ইউরোপের ব্যবসায়ী আবু সাঈদ রিয়াজ, তরুণ সংঘের চেয়ারম্যান ফজুলুল হক, গ্রিস প্রবাসী ওসমান গনি কামাল, ইতালি প্রবাসী ফয়সাল আহমেদ এবং সিঙ্গাপুর প্রবাসী মেজবাউল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।

অর্থনীতির মেরুদণ্ড রেমিট্যান্স বক্তারা জানান, গত অর্থবছরে বাংলাদেশ রেকর্ড ব্রেকিং ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে, যা দেশের আমদানি ব্যয়ের প্রায় ৪৫ শতাংশ মিটিয়েছে এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

একজন প্রতিনিধি বলেন, “এই রেমিট্যান্সই হলো দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড। আমাদের প্রবাসী ভাই-বোনেরা তাদের ঘাম ও রক্তের বিনিময়ে দেশের সমৃদ্ধির পথ প্রশস্ত করেছেন।”তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “তা সত্ত্বেও, দেশে ফেরার পর তাদের যে অবিরাম অবহেলা, হয়রানি এবং প্রশাসনিক জটিলতা পোহাতে হয়, এই লজ্জাজনক বাস্তবতা আর চলতে দেওয়া যায় না।

প্রবাসীরা শুধু পরিবারের ভরণ-পোষণ করেন না, তারা দেশের প্রবৃদ্ধি, বিনিয়োগ, সামাজিক উন্নয়ন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে সমৃদ্ধ করছেন। তবুও পাসপোর্ট, কাগজপত্র, মৃত্যু বা সম্পত্তি রক্ষার মতো সমস্যায় পড়লে তারা প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা থেকে প্রায়শই বঞ্চিত হন।সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, “এই অবস্থার পরিবর্তন না হলে দেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।

লিখিত বক্তব্যে প্রবাসী কর্মীদের জোট ১৫ দফা দাবিকে অনুরোধ নয়—প্রবাসীর ন্যায্য অধিকার’ হিসেবে সরকারের কাছে পেশ করেছে।

প্রবাসীদের ১৫-দফা দাবির প্রধান অংশ প্রবাসী কর্মীদের উত্থাপিত গুরুত্বপূর্ণ দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে: বিদেশের প্রতিটি দূতাবাসে ২৪ ঘণ্টার জরুরি হটলাইন ও হেল্পডেস্ক স্থাপন। প্রবাসী বিনিয়োগে কমপক্ষে ১০ বছরের জন্য কর-মুক্ত (Tax-Free) সুবিধা দেওয়া। বিদেশে পাসপোর্ট নবায়ন এবং বিভিন্ন সার্টিফিকেট দ্রুত সরবরাহের সুব্যবস্থা নিশ্চিত করা। বিদেশে মৃত্যু হলে শতভাগ সরকারি খরচে মরদেহ দেশে আনা। প্রত্যেক দূতাবাসে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত সেবা নিশ্চিত করা এবং মধ্যস্থতাকারীদের (দালাল) অংশগ্রহণ বন্ধ করা। দেশের প্রতিটি জেলায় প্রবাসী সেবা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা।রেমিট্যান্সে অন্তত ৫ শতাংশ সরকারি প্রণোদনা (ইনসেন্টিভ) ও সুযোগ-সুবিধা প্রদান। প্রবাসী পরিবারের জন্য ব্যাপক স্বাস্থ্যবীমা ব্যবস্থা করা। বিমানবন্দরে প্রবাসীদের জন্য আলাদা দ্রুতগতির ইমিগ্রেশন কাউন্টার স্থাপন। প্রবাসীদের সম্পত্তি রক্ষায় একটি বিশেষ পুলিশ ইউনিট গঠন।ফেরত আসা প্রবাসীদের জন্য দক্ষতা প্রশিক্ষণ ও সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা দেওয়া।বক্তারা সংবাদকর্মী ও দেশের জনগণের প্রতি এই বার্তাটি দেশের সবখানে পৌঁছে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, প্রবাসীর স্বীকৃতি ও নিরাপত্তার দাবিই আজকের আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সুর।