# ২০ সদস্যের সৌদি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল সোমবার ঢাকায় আসছেন
ঢাকা : সৌদি আরব-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এসএবিসিসিআই)—মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রথম দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চেম্বার—এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের লক্ষ্যে তিন দিনব্যাপী এক ব্যবসায়িক সম্মেলনে যোগ দিতে ২০ সদস্যের একটি উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন সৌদি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল আগামীকাল সোমবার (৬ অক্টোবর) ঢাকায় আসছে।
এসএবিসিসিআই-এর সভাপতি আশরাফুল হক চৌধুরী জানিয়েছেন, এই শীর্ষ সম্মেলন এবং চেম্বারটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা সৌদি আরব ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ও বিনিয়োগ সম্পর্ককে উল্লেখযোগ্যভাবে জোরদার করবে এবং বিভিন্ন খাতে সহযোগিতার নতুন পথ খুলে দেবে।
রবিবার গুলশানে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসএবিসিসিআই সভাপতি আশরাফুল হক চৌধুরী এই ঘোষণা দেন। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন এসএবিসিসিআই-এর সহ-সভাপতি আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক উজমা চৌধুরী এবং সিটি ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেসবাউল আসিফ সিদ্দিকী।
সৌদি আরব-বাংলাদেশ বিজনেস সামিটটি সোমবার থেকে বুধবার (৬-৮ অক্টোবর) বনানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হবে। নতুন গঠিত দ্বিপাক্ষিক চেম্বার এসএবিসিসিআই-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এক জমকালো আয়োজনে।
সম্মেলনে সৌদি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন মাজদ আল উমরান গ্রুপের মালিক শেখ ওমর আব্দুল হাফিজ আমির বকশ, যার আবাসন ও হসপিটালিটি খাতে ব্যবসা রয়েছে। প্রতিনিধিদলের অন্যান্য বিশিষ্ট সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন আল ইসায়ী গ্রুপের পরিচালক নাজি আব্দুল্লাহ, কিং আব্দুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং একটি আইটি কোম্পানির কর্ণধার অধ্যাপক মোহাম্মদ আসিফ সালাম, এবং আল তায়্যিবাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও স্বাস্থ্য খাতে ৩০ বছরের অভিজ্ঞ ডক্টর খালিদ আল হারবি।
লিখিত বক্তব্যে আশরাফুল হক চৌধুরী যৌথ এই উদ্যোগকে “সৌদি আরব ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক ও বিনিয়োগ অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার দিকে সময়োপযোগী পদক্ষেপ” হিসেবে বর্ণনা করেন।তিনি তৈরি পোশাক (আরএমজি), কৃষিপণ্য, আইটি, ডিজিটাল ফাইন্যান্স এবং পরিবেশবান্ধব পাটজাত পণ্যের জন্য সৌদি আরবের বিশাল সম্ভাবনাময় বাজার তুলে ধরেন।
তিনি উল্লেখ করেন, এটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মতো প্রচলিত বাজারের ওপর নির্ভরতা কমানোর একটি প্রচেষ্টা।চৌধুরী আরও বলেন, বাংলাদেশ এখন শুধু দক্ষ জনশক্তি প্রেরণেই নয়, বরং যৌথ বিনিয়োগেও আগ্রহী। তিনি বিশেষ করে পেট্রোকেমিক্যাল, ইস্পাত, কৃষি-শিল্প, সবুজ প্রযুক্তি, সাইবার নিরাপত্তা, এবং সেমিকন্ডাক্টরের মতো খাতগুলোতে দুই দেশের মধ্যে ব্যাপক সহযোগিতার সম্ভাবনার কথা জানান।
তিনি যোগ করেন, চট্টগ্রাম বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে সৌদি বিনিয়োগকারীদের জন্য সরকারের বরাদ্দকৃত শিল্পভূমি ‘সুবর্ণ সুযোগ’ এনে দেবে।জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সৌদি আরবে বাংলাদেশের রপ্তানি আগের বছরের ২৯০ মিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ৩১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
দুই দেশের মধ্যে মোট বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার।মূল অনুষ্ঠানের সময়সূচি ও অতিথি৬ অক্টোবর (সোমবার): বিকেলে সৌদি প্রতিনিধিদল ঢাকায় পৌঁছাবে। সন্ধ্যায় তাদের সম্মানে একটি ডিনার রিসেপশন আয়োজন করা হবে, যেখানে সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও এসএবিসিসিআই সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন।
৭ অক্টোবর (মঙ্গলবার) সকাল ১০টা: বনানীর হোটেল শেরাটনে বিজনেস সামিট শুরু হবে। এতে দুই দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ও বিশেষজ্ঞরা পেপার উপস্থাপন ও আলোচনা করবেন।
প্রধান অতিথি: বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। বিশেষ অতিথি: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। সভাপতিত্ব করবেন: বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।দুপুর দেড়টার পর: সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রোডাক্ট শোকেসিং এবং বিটুবি (Business to Business) সভা চলবে।
৭ অক্টোবর (মঙ্গলবার) সন্ধ্যা ৭টা:এসএবিসিসিআই-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হবে।উদ্বোধন করবেন: পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন। বিশেষ অতিথি: বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
৮ অক্টোবর (বুধবার): দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সম্মানিত অতিথিদের জন্য মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করবেন পররাষ্ট্র সচিব।সমাপনী: সন্ধ্যায় হোটেল সোনারগাঁওয়ে তিন দিনের সম্ভাবনা ও প্রাপ্তি নিয়ে একটি সমাপনী সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।