বুধবার ৩ ডিসেম্বর, ২০২৫
সর্বশেষ:
খালেদা জিয়াকে ভিভিআইপি ঘোষণার সিদ্ধান্ত ডিভাইস শিল্পের বিনিয়োগ সুরক্ষা দেবে সরকার : ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বাজারে আসছে নতুন ৫০০ টাকার নোট, বৃহস্পতিবার থেকেই পাওয়া যাবে জননিরাপত্তা জোরদারে ডিজিটাল ও কমিউনিটি কৌশল গ্রহণের তাগিদ বিশেষজ্ঞদের বাংলাদেশ আমদানি বন্ধ রাখায় বিপাকে ভারত, সীমান্তে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি ২ রুপিতে! দেশের অর্থনীতি কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় পৌঁছায়নি, কাজ করার সুযোগ আছে: বাণিজ্য সচিব অবৈধ মাছ ধরা বন্ধে বৈশ্বিক সহযোগিতা জরুরি: মৎস্য উপদেষ্টা বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর অনুকূল পরিবেশ তৈরির তাগিদ ইইউর শাহরুখ খানের মার্কশিট ভাইরাল: কোন বিষয়ে কত নম্বর পেয়েছিলেন বলিউড বাদশা?

পোশাকশিল্পের টিকে থাকার জন্য মূল্য সংযোজন জরুরি: ফ্রাঙ্কফুর্টে বসছে টেক্সটাইল প্রযুক্তির বিশ্বমেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা: বাংলাদেশের পোশাক খাতে প্রতিযোগিতা ধরে রাখা এবং টিকে থাকার জন্য সর্বশেষ উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির ব্যবহার এবং মূল্য সংযোজন এখন অপরিহার্য। স্বাস্থ্যসেবা, অটোমোটিভ ও নির্মাণসহ বিভিন্ন খাতে টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের ক্রমবর্ধমান চাহিদা এক্ষেত্রে বড় সুযোগ তৈরি করেছে। এসব উন্নত প্রযুক্তি ও প্রক্রিয়ার সঙ্গে দেশীয় নির্মাতাদের পরিচিত করার লক্ষ্য নিয়ে আগামী ২১ থেকে ২৪ এপ্রিল ২০২৬ তারিখে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে অনুষ্ঠিত হবে টেকটেক্সটিল (Techtextil) ও টেক্সপ্রসেস (Texprocess) নামের দুটি আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী।

বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) ঢাকার একটি হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বৈশ্বিক টেক্সটাইল বাণিজ্য প্রদর্শনী আয়োজক মেসে ফ্রাঙ্কফুর্ট এই তথ্য গণমাধ্যমকে জানায়। এই দুটি আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে উদ্ভাবন ও মূল্য সংযোজন বাড়াতে টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ওপর আলোকপাত করা হবে।

বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ

মেসে ফ্রাঙ্কফুর্ট এসপি বাংলাদেশের হেড অব অপারেশনস রুমানা আফরোজ জানান, বিশ্ববাজারে গার্মেন্টস খাতে বাংলাদেশের নেতৃত্বের কারণে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ ভিজিটর দেশের মধ্যে বাংলাদেশকে বেছে নেওয়া হয়েছে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, “বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পের টিকে থাকার জন্য এখন মূল্য সংযোজন অত্যন্ত জরুরি।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, টেকনিক্যাল টেক্সটাইল এখন শুধু কৃষি ও নির্মাণের মতো ঐতিহ্যগত খাতেই নয়, বরং স্বাস্থ্যসেবা, ক্রীড়া এবং অটোমোটিভের মতো নতুন খাতেও ব্যবহৃত হচ্ছে, যা বড় সুযোগ সৃষ্টি করছে।

প্রযুক্তি ও উৎপাদন দক্ষতা

জার্মান প্রতিষ্ঠান ভেইট জিএমবিএইচ-এর কান্ট্রি ম্যানেজার (সেলস) মো. আরিফুর রহমান বলেন, “প্রতিবছর আমরা টেক্সপ্রসেসে অংশ নিয়ে আমাদের সর্বশেষ প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী প্রসেসিং সরঞ্জাম প্রদর্শন করি। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো এমন মেশিনারি প্রদান করা যা কম শক্তি ব্যবহার করে বেশি দক্ষতা নিশ্চিত করে—ফলে উৎপাদন ব্যয় কমে এবং শক্তি সাশ্রয় হয়।” তিনি জানান, ইস্ত্রি, ফিউজিং, প্রেসিং ও গার্মেন্টস ফিনিশিং যন্ত্রপাতি উৎপাদনে ভেইট জিএমবিএইচ বিশ্বনেতা।

প্রদর্শনীর বিশেষত্ব

২০২৬ সালের এই প্রদর্শনীতে প্রযুক্তিগত টেক্সটাইল, ফাংশনাল অ্যাপারেল ফ্যাব্রিক, নন-ওভেনস এবং আধুনিক পোশাক উৎপাদন যন্ত্রপাতির সবচেয়ে বিস্তৃত পরিসর একই ছাদের নিচে প্রদর্শন করা হবে। টেকটেক্সটিলের ১৪টি কান্ট্রি প্যাভিলিয়ন (যার মধ্যে বেলজিয়াম, ফ্রান্স, ইতালি, পর্তুগাল ও সুইজারল্যান্ড রয়েছে) এবং টেক্সপ্রসেসের চীন ও তাইওয়ানের দুটি প্যাভিলিয়ন বাংলাদেশি ভিজিটরদের আধুনিক প্রযুক্তি ও ইনোভেশন সম্পর্কে মূল্যবান ধারণা দেবে।

বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন ও প্রত্যাশা

এই আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এবং বিজিএমইএ-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে প্রযুক্তিগত ও ভ্যালু-অ্যাডেড টেক্সটাইলে বিশেষায়িত পাঁচটি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। ২০২২ এবং ২০২৪ সালে সফল অংশগ্রহণের ধারাবাহিকতায় ২০২৬ সালে আরও বড় প্যাভিলিয়ন প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে ১০০ জনেরও বেশি ট্রেড ভিজিটর এই প্রদর্শনীতে অংশ নিয়ে বিশ্বজুড়ে প্রদর্শক ও ক্রেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ ধরনের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ নতুন বাণিজ্য সুযোগ, প্রযুক্তি স্থানান্তর ও দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি টেকসই ও উচ্চমানের টেক্সটাইল উৎপাদনে বাংলাদেশকে একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সহায়তা করে।