বুধবার ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫
সর্বশেষ:
বিএপিএলসির সভাপতি রিয়াদ মাহমুদ, সহ-সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ ঢাবিতে চার দিনব্যাপী বিআইআইটি-আইআইআইটি উইন্টার স্কুল শুরু চলতি বছরে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত জনশক্তি রপ্তানি ১০ লক্ষাধিক খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ মোহাম্মদ জহুরুল ইসলামের ইন্তেকাল: বিআইআইটি-এর শোক নতুন পাঠ্যবই মুদ্রণ ও বিতরণে বিঘ্নের আশঙ্কা নেই: সালেহউদ্দিন বাংলাদেশের ঐতিহাসিক শ্রম সংস্কার, বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি লাভ ফরেন এক্সচেঞ্জ বাজার স্থিতিশীল রাখতে ১৩ ব্যাংক থেকে ২০২ মিলিয়ন ডলার কিনলো বাংলাদেশ ব্যাংক বিজিএমইএ এর স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ সম্প্রসারণ: আরও ৪টি হাসপাতালের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর মিরসরাইয়ের বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে চীনা কোম্পানির ১০.৩২ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ

জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় নারী উদ্যোক্তাদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে অর্থায়ন বৃদ্ধির তাগিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা: আন্তর্জাতিক ও সরকারি পর্যায়ে ঝুঁকি মোকাবিলার তহবিল থেকে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি বিবেচনা করে নারী উদ্যোক্তাসহ সকল উদ্যোক্তার জন্য অতিরিক্ত অর্থায়ন নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বিশেষভাবে জলবায়ুকে মাথায় রেখে পরিবেশবান্ধব ও টেকসই উপায়ে ব্যবসা পরিচালনাকারীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার ওপর জোর দেন।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকার লেকশোর হোটেলে ‘ভয়েসেস ফর চেঞ্জ: পুটিং ক্লাইমেট অ্যাকশন, উইমেন এন্ট্রাপ্রেনারস অ্যান্ড এসএমই ইন বাংলাদেশ’স পাবলিক পলিসি’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন। উইমেন এন্ট্রাপ্রেনার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (WEAB) সভাপতি নাসরিন ফাতেমা আউয়ালের সভাপতিত্বে এই সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।

অর্থায়ন ও দৃশ্যমানতা বৃদ্ধি

উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, নারী উদ্যোক্তা বৃদ্ধির মূল লক্ষ্য শুধু সংখ্যা বাড়ানো নয়, বরং তাদের দৃশ্যমানতা বাড়ানো। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও এসএমই ফাউন্ডেশনের মতো সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বিশেষ সহায়তা দিলেও দেশের জনসংখ্যার ৫১ শতাংশ নারী হওয়া সত্ত্বেও সুযোগের পরিধি এখনো যথেষ্ট নয়। তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠ নারীদেরই তাদের সুযোগের অধিকার নিশ্চিত করার তাগিদ দেন।

কর্মসংস্থান ও ঋণের নিশ্চয়তা

  • এসএমই খাতকে দেশের কর্মসংস্থান সৃষ্টির সবচেয়ে বড় উৎস হিসেবে উল্লেখ করে তিনি জানান, সম্ভাব্য কর্মসংস্থানের ৫০ থেকে ৬০ শতাংশই নারীদের জন্য উপযুক্ত
  • তিনি আরও বলেন, একজন নারী উদ্যোক্তা নিজের সঙ্গে আরও কয়েকজন নারীকে কর্মসংস্থানের সুযোগ দেন
  • নারীর আর্থিক শৃঙ্খলার প্রশংসা করে তিনি বলেন, “নারীরা ঋণ নিলে তা পরিশোধ করেন—এটা প্রমাণিত সত্য। তাই নারীদের ঋণ সহায়তা আরও বাড়ানো উচিত।”

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব

উপদেষ্টা ভূমিকম্পের সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের তুলনা করে বলেন, “ভূমিকম্প বড় আঘাত হয়তো একবার দেয়, কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিদিনের সমস্যা।” তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন যে, কার্বন নিঃসরণে বাংলাদেশ বড় অবদান না রাখলেও, ভুক্তভোগী দেশ হিসেবে প্রথম সাতটি দেশের মধ্যে রয়েছে

  • জলবায়ু আলোচনায় উপেক্ষা: তিনি কপ-৩০-এ (COP30) বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের প্রধান হিসেবে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে জানান, ব্রাজিলের বেলেমে অনুষ্ঠিত জলবায়ু আলোচনায় নারীদের উদ্বেগ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় আসেনি
  • মৎস্য খাত সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত: তিনি উল্লেখ করেন যে, জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় শিকার হচ্ছে মৎস্য খাত। এর প্রভাবে নদী ও সাগরে ইলিশের প্রাপ্যতা কমে যাচ্ছে, এবং সমুদ্রের বহু এলাকায় অক্সিজেন ঘাটতিজনিত অঞ্চল তৈরি হচ্ছে, যা মৎস্যসম্পদের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ।
  • মিথেন কমানোর উদ্যোগ: তিনি স্বীকার করেন, দেশে পরিবেশবান্ধব নয় এমন কৃষি ও পশুপালন পদ্ধতিতে কার্বন নিঃসরণ বাড়লেও, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় গবাদিপশুর খাদ্যাভ্যাস উন্নয়নের মাধ্যমে মিথেন কমানোর উদ্যোগ নিচ্ছে।

অন্যান্য বক্তাদের আহ্বান

সেমিনারে অন্যান্য বক্তারাও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় নারী উদ্যোক্তা ও ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্পের (এসএমই) কার্যকর অংশগ্রহণ এবং এসব খাতে টেকসই নীতি সহায়তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

বক্তারা জলবায়ু সহনশীল অর্থনীতি গঠনে নারীদের অবদান এবং এসএমই খাতের সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান সেমিনারে অংশগ্রহণকারীরা।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মো. মুশফিকুর রহমান, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মো. রফিকুল ইসলাম

আরও পড়ুন