মঙ্গলবার ২ ডিসেম্বর, ২০২৫
সর্বশেষ:
খালেদা জিয়াকে ভিভিআইপি ঘোষণার সিদ্ধান্ত ডিভাইস শিল্পের বিনিয়োগ সুরক্ষা দেবে সরকার : ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বাজারে আসছে নতুন ৫০০ টাকার নোট, বৃহস্পতিবার থেকেই পাওয়া যাবে জননিরাপত্তা জোরদারে ডিজিটাল ও কমিউনিটি কৌশল গ্রহণের তাগিদ বিশেষজ্ঞদের বাংলাদেশ আমদানি বন্ধ রাখায় বিপাকে ভারত, সীমান্তে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি ২ রুপিতে! দেশের অর্থনীতি কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় পৌঁছায়নি, কাজ করার সুযোগ আছে: বাণিজ্য সচিব অবৈধ মাছ ধরা বন্ধে বৈশ্বিক সহযোগিতা জরুরি: মৎস্য উপদেষ্টা বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর অনুকূল পরিবেশ তৈরির তাগিদ ইইউর শাহরুখ খানের মার্কশিট ভাইরাল: কোন বিষয়ে কত নম্বর পেয়েছিলেন বলিউড বাদশা?

জননিরাপত্তা জোরদারে ডিজিটাল ও কমিউনিটি কৌশল গ্রহণের তাগিদ বিশেষজ্ঞদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা:

বাংলাদেশের জননিরাপত্তা জোরদার করার জন্য প্রথাগত পুলিশের পাশাপাশি কমিউনিটি-ভিত্তিক এবং পরিবেশ-কেন্দ্রিক অপরাধ প্রতিরোধ কৌশলকে সমন্বিত করার প্রয়োজন রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। মঙ্গলবার ঢাকায় এক আন্তর্জাতিক সেমিনারে বক্তারা এই অভিমত ব্যক্ত করেন।

বক্তারা জোর দেন যে অপরাধ প্রতিরোধ শুরু হওয়া উচিত নজরদারি এবং নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে, এবং এমনভাবে জনপরিসর বা পাবলিক স্পেস ডিজাইন করে, যাতে অপরাধের সুযোগ কমে যায়।

তারা আরও বলেন, নিরাপদ এলাকা তৈরি করতে এবং দীর্ঘমেয়াদী প্রতিরোধ প্রচেষ্টা বজায় রাখতে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ, কমিউনিটির সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং ডিজিটাল সরঞ্জাম ব্যবহারের প্রয়োজন রয়েছে।

অপরাধ প্রতিরোধে পরিবেশ-ভিত্তিক কৌশল

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পিকেএসএস ভবনে অনুষ্ঠিত ‘বিল্ডিং রেজিলিয়েন্ট কমিউনিটিস অ্যান্ড ইমপ্রুভিং লিভিং এনভায়রনমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা ‘অপরাধ সুযোগ তত্ত্বের’ (Crime Opportunity Theory) ওপর ভিত্তি করে একটি বিস্তৃত কাঠামো তুলে ধরেন।

এই তত্ত্ব অনুসারে, পরিবেশগত অবস্থা প্রায়শই ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যের চেয়ে অপরাধমূলক আচরণকে বেশি প্রভাবিত করে।

তারা বলেন, কমিউনিটিগুলো নিম্নলিখিত বিষয়গুলো নিশ্চিত করার মাধ্যমে সুযোগসন্ধানী অপরাধ কমাতে পারে:

  • জনপরিসর দৃশ্যমান রাখা: স্থানগুলো যেন সর্বদা চোখে পড়ে।
  • ঘন ঘন ব্যবহার নিশ্চিত করা: স্থানগুলোতে মানুষের নিয়মিত চলাচল থাকা।
  • অদৃশ্য বা দুর্বলভাবে পর্যবেক্ষণ করা এলাকা পরিহার: লুকিয়ে থাকার সুযোগ বা নজরদারিহীন স্থান না রাখা।

বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেন, পার্ক, হাঁটার পথ, অব্যবহৃত স্থান এবং দুর্বলভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা এলাকাগুলো প্রায়শই “সহজে প্রবেশ করা যায় কিন্তু দেখা কঠিন” হওয়ায় অপরাধের হটস্পটে পরিণত হয়।

প্রযুক্তি ও কমিউনিটি শক্তির গুরুত্ব

সেমিনারে জননিরাপত্তার অপরিহার্য উপাদান হিসেবে কমিউনিটি শক্তি, ভাগ করা দায়িত্ব এবং সামাজিক মিথস্ক্রিয়া-এর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

  • ডিজিটাল টুলস: ইভেন্টের একটি প্রধান আকর্ষণ ছিল অপরাধ প্রতিরোধে আইসিটি-র ব্যবহার। সেমিনারে “মিমাই” (Miimai) অপরাধ প্রতিরোধ ওয়াকিং অ্যাপ দেখানো হয়। এই অ্যাপটি বাসিন্দাদের নিরাপদ ও অনিরাপদ এলাকা চিহ্নিত করতে, রিয়েল-টাইমে রিপোর্ট দাখিল করতে এবং ঝুঁকিপূর্ণ রুট শনাক্ত করতে সাহায্য করে। এই অ্যাপ ঐতিহ্যবাহী কমিউনিটি নিরাপত্তা মানচিত্রের একটি ডিজিটাল এক্সটেনশন হিসেবে কাজ করে।
  • স্বেচ্ছাসেবক ও যুব সমাজ: অংশগ্রহণকারীরা স্বেচ্ছাসেবকদের অংশগ্রহণ কমে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং যুব সমাজকে যুক্ত করা, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে টহল দল গঠন, হটস্পট পর্যবেক্ষণ, নিরাপদ স্কুল রুট তৈরি এবং ডিজিটাল সরঞ্জাম ও ফিল্ড ওয়ার্কশপের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দেন।

উপস্থিত বক্তারা

সেমিনারটি পিকেএসএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ ফজলুল কাদেরের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হয় এবং পিকেএসএফ পরিচালনা পর্ষদের সদস্য অধ্যাপক ড. মোঃ তৌফিকুল ইসলামের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে শেষ হয়।

কাগাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. টোমু ওকুবো এবং ড. শিহো তানাকা এবং রিক্কিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. নাওনোরি কুসাকাবে আইসিটি-ভিত্তিক অপরাধ প্রতিরোধ শিক্ষা এবং বাংলাদেশের জন্য কমিউনিটি সহায়তা মডেলের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন এআইইউবি-এর সহযোগী অধ্যাপক ড. বিএম সাজ্জাদ হোসেন, বাস্টব-এর নির্বাহী পরিচালক রুহি দাস, সিডিআইপি-এর নির্বাহী পরিচালক মিফতা নাইম হুদা, টিএমএসএস-এর উপ-নির্বাহী পরিচালক মোঃ সোহরাব আলী খান, এবং আরডিআরএস-বাংলাদেশ-এর পরিচালক তারিক সাঈদ হারুন