ঢাকা:দেশের ব্যাংকিং খাতে এস আলম গ্রুপের কথিত ‘অবৈধ নিয়োগ ও একচেটিয়া দখলদারত্ব’ বাতিলের দাবিতে আজ রবিবার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর দিলকুশায় ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারের সামনে মানববন্ধন করেছে ইসলামী ব্যাংক গ্রাহক ফোরাম।
বক্তারা ২০১৭ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এস আলম গ্রুপের প্রভাব খাটিয়ে ইসলামী ব্যাংকে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পর্যায়ে দেওয়া অবৈধ নিয়োগগুলো অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানান। একইসঙ্গে তারা সারা দেশ থেকে মেধা যাচাইয়ের মাধ্যমে সৎ ও যোগ্য প্রার্থী নিয়োগের আহ্বান জানান।
মানববন্ধনে অভিযোগ সমাবেশে ব্যবসায়ী শাহিন আহমেদ খান, মো. মোতাসিম বিল্লাহ, মো. দেলোয়ার হোসেন, মো. ইমাম হোসাইন, অ্যাডভোকেট ওয়ালিউল্লাহ, হাফিজুর রহমান এবং ডিএম শওকত আলী বক্তব্য দেন। সচেতন পেশাজীবী গ্রুপ, ইসলামী ব্যাংক সিবিএ এবং সচেতন ব্যাংকার সমাজও একই দাবিতে পৃথকভাবে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
বক্তারা অভিযোগ করেন: এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর ২০১৭ সালের পর থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন পদে ৮,৩৪০০ জনকে অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়েছে, যাদের অধিকাংশেরই মূল উৎস চট্টগ্রাম অঞ্চল।নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে ৪,৫০০ জনেরও বেশি শুধুমাত্র পটিয়া উপজেলার বাসিন্দা বলে দাবি করা হয়। দেশের ৬৩ জেলার প্রার্থীদের বঞ্চিত করে একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের প্রার্থীদের প্রাধান্য দেওয়ায় ব্যাংকের সেবার মান ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। নিয়োগপ্রাপ্তদের অধিকাংশই গ্রাহকদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন, পেশাদার সেবা দিতে অক্ষম এবং আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলার কারণে গ্রাহকদের যোগাযোগে সমস্যা তৈরি হয়।
বক্তারা অবিলম্বে এসব অবৈধ নিয়োগ বাতিল করে সারা দেশ থেকে মেধাভিত্তিক নিয়োগ নিশ্চিত করার দাবি জানান।
মূল্যায়ন পরীক্ষায় গণ-অনুপস্থিতি ও ব্যবস্থা নিয়োগপ্রাপ্তদের যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি একটি পদক্ষেপ গ্রহণ করে। গত ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ-এর মাধ্যমে একটি মূল্যায়ন পরীক্ষা আয়োজন করা হয়।
এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ৫,৩৮৫ জন কর্মকর্তাকে ডাকা হলেও মাত্র ৪১৪ জন অংশ নেন। গণ-অনুপস্থিতির কারণে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অবশিষ্ট ৪,৯৭১ জন কর্মকর্তাকে ওএসডি (Officer on Special Duty) করেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, তাদের মধ্যে ৪০০ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাদের সব ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।বক্তারা হুঁশিয়ারি দেন, কথিত “ব্যাংক লুটেরা এস আলম” এবং তার নিয়োগ দেওয়া অযোগ্য কর্মকর্তাদের অপসারণ না করা হলে গ্রাহকরা ধীরে ধীরে ইসলামী ব্যাংক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে।