শনিবার ২৬ জুলাই, ২০২৫
সর্বশেষ:
ব্যাংকিং খাতের পুনর্গঠনের জন্য ৩৫ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন, কারণ ৮০% তহবিল আত্মসাৎ হয়েছে: অর্থ উপদেষ্টা নির্বাচন বানচাল করারা অপচেষ্টাকে রুখে দিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার ইন্টেরিয়র ডিজাইন খাত: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আইডেবের সংবাদ সম্মেলন বিজিএমইএ তে প্রয়াত আব্দুল্লাহ হিল রাকিবের স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত বৈদেশিক মুদ্রার সংকটে বাংলাদেশের ঋণমানের দৃষ্টিভঙ্গি নেতিবাচক: এসঅ্যান্ডপি অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে জুন মাসে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ৭% এর নিচে নেমে এসেছে মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনায় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ ব্যাংক খাতের সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংকে নতুন বিভাগ ‘ব্যাংক রেজুলেশন ডিপার্টমেন্ট’ বর্তমানবিচারব্যবস্থায়আর্থিকখাতকখনোইঘুরেদাঁড়াবেনা: গভর্নর

ইন্টেরিয়র ডিজাইন খাত: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আইডেবের সংবাদ সম্মেলন

ঢাকা, ২৬ জুলাই ২০২৫: বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল ইন্টেরিয়র ডিজাইন খাত বর্তমানে সম্ভাবনার এক নতুন দিগন্তে দাঁড়িয়ে আছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, নগরায়ণ এবং মানুষের রুচির পরিবর্তনের সাথে সাথে ঘর, অফিস, দোকান, রেস্টুরেন্ট এবং হোটেলের মতো বিভিন্ন স্থাপনার ইন্টেরিয়র ডিজাইনের গুরুত্ব বাড়ছে। তবে এই সম্ভাবনার পাশাপাশি খাতটিতে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও বিদ্যমান, যা সমাধান না হলে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি ব্যাহত হতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে, ইন্টেরিয়র ডিজাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইডেব) তাদের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকার ইকোনমিক জার্নালিস্ট ফোরামের অডিটোরিয়ামে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। 1

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আইডেব-এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাইফুল ইসলাম শরন, সহ-সভাপতি আর্কিটেক্ট সজীব জাহান এবং প্রধান উপদেষ্টা শাফিউল ইসলাম। তাদের বক্তব্যে দেশের ইন্টেরিয়র ডিজাইন খাতের বর্তমান সমস্যা, সম্ভাবনা এবং ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা উঠে আসে। 2

বর্তমান সমস্যা ও চ্যালেঞ্জসমূহ:

ইন্টেরিয়র ডিজাইন খাতের প্রধান সমস্যাগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  • অতিরিক্ত ভ্যাট ও ট্যাক্সের বোঝা: বর্তমানে ডিজাইন কনসালটেন্সির উপর ১৫% উচ্চ হারে ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে, যা ডিজাইনারদের সেবা চার্জ এবং ক্লায়েন্টদের প্রকল্পের খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে। 3
  • ম্যাটেরিয়ালের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি: আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধি, ডলার সংকট এবং স্থানীয় সিন্ডিকেটের কারণে কাঠ, প্লাইউড, এমডিএফ, ভিনিয়ার, হার্ডওয়্যার, লাইটিং-সহ অন্যান্য পণ্যের দাম প্রায় ৩০-৪০% বৃদ্ধি পেয়েছে। 4এর ফলে অনেক ডিজাইনার নিম্নমানের ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন। 5
  • উচ্চ আমদানি শুল্ক: ইন্টেরিয়র খাতে ব্যবহৃত কিছু গুরুত্বপূর্ণ হার্ডওয়্যার, হোম অটোমেশন সিস্টেম, লাইটিং, ফ্লোরিং ম্যাটেরিয়াল এবং স্মার্ট লকের উপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপের কারণে ডিজাইনাররা আন্তর্জাতিক মানের পণ্য সহজে ব্যবহার করতে পারছেন না। 6
  • দক্ষ মানবসম্পদের অভাব: সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইন্টেরিয়র ডিজাইন বিভাগ না থাকায় পর্যাপ্ত ও মানসম্পন্ন ইন্টেরিয়র ডিজাইনার তৈরি হচ্ছে না। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও কোর্স সংখ্যা সীমিত এবং খরচ বেশি। 7

আইডেব-এর প্রস্তাবিত সমাধান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:

আইডেব সংবাদ সম্মেলনে বেশ কিছু প্রস্তাবনা উত্থাপন করেছে:

  • অতিরিক্ত ভ্যাট ও শুল্ক কমানোর জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ। 8
  • ইন্টেরিয়র ডিজাইন খাতে ব্যবহৃত ম্যাটেরিয়ালের বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে সরকারের হস্তক্ষেপ।
  • সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইন্টেরিয়র ডিজাইন বিভাগ চালু করা। 9
  • বিশেষ দক্ষতা বৃদ্ধি প্রকল্প চালুর জন্য সরকারি অনুদানের দাবি। 10
  • প্রতিভাবান ডিজাইনারদের জন্য ‘IDAB Excellence in Interior Design Award’ চালু করা। 11

আইডেব-এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাইফুল ইসলাম শরন বলেন, “ইন্টেরিয়র ডিজাইন শিল্প বাংলাদেশের আধুনিক নগরায়ণ এবং মানুষের মানসম্মত জীবনযাপনের জন্য অপরিহার্য। তবে ভ্যাট ও শুল্কের বোঝা, ম্যাটেরিয়ালের অস্বাভাবিক দাম এই খাতের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করছে। সরকারের সহযোগিতা ছাড়া এই খাতের টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়।” 12তিনি আরও জানান, দেশে ১০,০০০-এর বেশি ছোট-বড় ইন্টেরিয়র ফার্ম এবং লাখের বেশি শ্রমিক এই খাতের উপর নির্ভরশীল। 13

সহ-সভাপতি আর্কিটেক্ট সজীব জাহান উল্লেখ করেন, “ইন্টেরিয়র ডিজাইন পেশা এখনও দেশে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পায়নি। সরকারি চাকরিতে, সরকারি প্রকল্পে এবং অবকাঠামো উন্নয়নের বড় বড় প্রজেক্টে ইন্টেরিয়র ডিজাইনারদের ভূমিকা রাখা প্রয়োজন। এর জন্য ইন্টেরিয়র ডিজাইনের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করা উচিত।” 14

প্রধান উপদেষ্টা শাফিউল ইসলাম বলেন, “ইন্টেরিয়র ডিজাইন মানে শুধু ঘর সাজানো নয়, বরং বাসযোগ্য, স্বাস্থ্যকর ও মানসম্মত পরিবেশ তৈরি করা। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ট্রেনিং প্রোগ্রাম চালু করতে হবে। সরকারি অনুদান পেলে আইডেব এই খাতের দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে।” 15

সংবাদ সম্মেলনে ‘IDAB Excellence in Interior Design Award’ চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়, যা প্রতি বছর বাংলাদেশের উদীয়মান এবং অভিজ্ঞ ডিজাইনারদের সম্মানিত করবে। 16

খাতের সম্ভাবনা:

ইন্টেরিয়র ডিজাইন খাতের উজ্জ্বল সম্ভাবনার দিকগুলো হলো:

  • নগরায়ণ: বাংলাদেশে দ্রুত শহরায়ণের হার বৃদ্ধির ফলে আবাসিক ও বাণিজ্যিক ইন্টেরিয়র ডিজাইনের চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। 17
  • টেকসই ডিজাইনের চাহিদা: পরিবেশবান্ধব, সাশ্রয়ী এবং কার্যকর স্পেস ম্যানেজমেন্টের কারণে স্মার্ট ডিজাইন এখন মানুষের কাছে প্রাধান্য পাচ্ছে। 18
  • বাণিজ্যিক স্থানের বৃদ্ধি: হোটেল, রেস্টুরেন্ট, অফিস স্পেস বৃদ্ধির কারণে বাণিজ্যিক ডিজাইনের চাহিদা বাড়ছে। 19
  • ই-কমার্স ও রিটেইল ব্যবসার প্রসার: ই-কমার্স এবং রিটেইল ব্যবসার বৃদ্ধির সাথে সাথে শোরুম ডিজাইনের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে। 20
  • স্মার্ট হোম ও হোম অটোমেশনের চাহিদা: স্মার্ট লাইটিং, স্মার্ট লক, হোম থিয়েটার এবং স্মার্ট কিচেন ব্যবহারে মানুষের আগ্রহ বাড়ছে, যা নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করছে। 21

আইডেব আগামী এক বছরে ডিজাইনারদের জন্য বিনামূল্যে বা ন্যূনতম খরচে স্কিল ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্কশপ আয়োজন, ইন্টেরিয়র ডিজাইনার রেজিস্ট্রেশন নীতিমালা তৈরির জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাবনা, ইন্টেরিয়র ডিজাইনকে এসএমই খাতের আওতায় আনার জন্য পলিসি লবিং, ক্লায়েন্ট সচেতনতায় “No Free Design” অনলাইন ক্যাম্পেইন এবং সাসটেইনেবল ও স্মার্ট ইন্টেরিয়র ডিজাইন নিয়ে আন্তর্জাতিক সেমিনার আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে। 22

উপসংহারে, ইন্টেরিয়র ডিজাইন খাতের বর্তমান সমস্যা এবং সম্ভাবনার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সময় এসেছে। আইডেব-এর মতো সংগঠনগুলো সরকারের সহযোগিতা পেলে এই খাত দ্রুত একটি টেকসই, সুন্দর এবং আধুনিক বাংলাদেশের অংশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। 23

ইন্টেরিয়র ডিজাইন খাত: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আইডেবের সংবাদ সম্মেলন

ঢাকা, ২৬ জুলাই ২০২৫: বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল ইন্টেরিয়র ডিজাইন খাত বর্তমানে সম্ভাবনার এক নতুন দিগন্তে দাঁড়িয়ে আছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, নগরায়ণ এবং মানুষের রুচির পরিবর্তনের সাথে সাথে ঘর, অফিস, দোকান, রেস্টুরেন্ট এবং হোটেলের মতো বিভিন্ন স্থাপনার ইন্টেরিয়র ডিজাইনের গুরুত্ব বাড়ছে। তবে এই সম্ভাবনার পাশাপাশি খাতটিতে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও বিদ্যমান, যা সমাধান না হলে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি ব্যাহত হতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে, ইন্টেরিয়র ডিজাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইডেব) তাদের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকার ইকোনমিক জার্নালিস্ট ফোরামের অডিটোরিয়ামে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। 1

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আইডেব-এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাইফুল ইসলাম শরন, সহ-সভাপতি আর্কিটেক্ট সজীব জাহান এবং প্রধান উপদেষ্টা শাফিউল ইসলাম। তাদের বক্তব্যে দেশের ইন্টেরিয়র ডিজাইন খাতের বর্তমান সমস্যা, সম্ভাবনা এবং ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা উঠে আসে। 2

বর্তমান সমস্যা ও চ্যালেঞ্জসমূহ:

ইন্টেরিয়র ডিজাইন খাতের প্রধান সমস্যাগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  • অতিরিক্ত ভ্যাট ও ট্যাক্সের বোঝা: বর্তমানে ডিজাইন কনসালটেন্সির উপর ১৫% উচ্চ হারে ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে, যা ডিজাইনারদের সেবা চার্জ এবং ক্লায়েন্টদের প্রকল্পের খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে। 3
  • ম্যাটেরিয়ালের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি: আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধি, ডলার সংকট এবং স্থানীয় সিন্ডিকেটের কারণে কাঠ, প্লাইউড, এমডিএফ, ভিনিয়ার, হার্ডওয়্যার, লাইটিং-সহ অন্যান্য পণ্যের দাম প্রায় ৩০-৪০% বৃদ্ধি পেয়েছে। 4এর ফলে অনেক ডিজাইনার নিম্নমানের ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন। 5
  • উচ্চ আমদানি শুল্ক: ইন্টেরিয়র খাতে ব্যবহৃত কিছু গুরুত্বপূর্ণ হার্ডওয়্যার, হোম অটোমেশন সিস্টেম, লাইটিং, ফ্লোরিং ম্যাটেরিয়াল এবং স্মার্ট লকের উপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপের কারণে ডিজাইনাররা আন্তর্জাতিক মানের পণ্য সহজে ব্যবহার করতে পারছেন না। 6
  • দক্ষ মানবসম্পদের অভাব: সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইন্টেরিয়র ডিজাইন বিভাগ না থাকায় পর্যাপ্ত ও মানসম্পন্ন ইন্টেরিয়র ডিজাইনার তৈরি হচ্ছে না। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও কোর্স সংখ্যা সীমিত এবং খরচ বেশি। 7

আইডেব-এর প্রস্তাবিত সমাধান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:

আইডেব সংবাদ সম্মেলনে বেশ কিছু প্রস্তাবনা উত্থাপন করেছে:

  • অতিরিক্ত ভ্যাট ও শুল্ক কমানোর জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ। 8
  • ইন্টেরিয়র ডিজাইন খাতে ব্যবহৃত ম্যাটেরিয়ালের বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে সরকারের হস্তক্ষেপ।
  • সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইন্টেরিয়র ডিজাইন বিভাগ চালু করা। 9
  • বিশেষ দক্ষতা বৃদ্ধি প্রকল্প চালুর জন্য সরকারি অনুদানের দাবি। 10
  • প্রতিভাবান ডিজাইনারদের জন্য ‘IDAB Excellence in Interior Design Award’ চালু করা। 11

আইডেব-এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাইফুল ইসলাম শরন বলেন, “ইন্টেরিয়র ডিজাইন শিল্প বাংলাদেশের আধুনিক নগরায়ণ এবং মানুষের মানসম্মত জীবনযাপনের জন্য অপরিহার্য। তবে ভ্যাট ও শুল্কের বোঝা, ম্যাটেরিয়ালের অস্বাভাবিক দাম এই খাতের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করছে। সরকারের সহযোগিতা ছাড়া এই খাতের টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়।” 12তিনি আরও জানান, দেশে ১০,০০০-এর বেশি ছোট-বড় ইন্টেরিয়র ফার্ম এবং লাখের বেশি শ্রমিক এই খাতের উপর নির্ভরশীল। 13

সহ-সভাপতি আর্কিটেক্ট সজীব জাহান উল্লেখ করেন, “ইন্টেরিয়র ডিজাইন পেশা এখনও দেশে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পায়নি। সরকারি চাকরিতে, সরকারি প্রকল্পে এবং অবকাঠামো উন্নয়নের বড় বড় প্রজেক্টে ইন্টেরিয়র ডিজাইনারদের ভূমিকা রাখা প্রয়োজন। এর জন্য ইন্টেরিয়র ডিজাইনের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করা উচিত।” 14

প্রধান উপদেষ্টা শাফিউল ইসলাম বলেন, “ইন্টেরিয়র ডিজাইন মানে শুধু ঘর সাজানো নয়, বরং বাসযোগ্য, স্বাস্থ্যকর ও মানসম্মত পরিবেশ তৈরি করা। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ট্রেনিং প্রোগ্রাম চালু করতে হবে। সরকারি অনুদান পেলে আইডেব এই খাতের দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে।” 15

সংবাদ সম্মেলনে ‘IDAB Excellence in Interior Design Award’ চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়, যা প্রতি বছর বাংলাদেশের উদীয়মান এবং অভিজ্ঞ ডিজাইনারদের সম্মানিত করবে। 16

খাতের সম্ভাবনা:

ইন্টেরিয়র ডিজাইন খাতের উজ্জ্বল সম্ভাবনার দিকগুলো হলো:

  • নগরায়ণ: বাংলাদেশে দ্রুত শহরায়ণের হার বৃদ্ধির ফলে আবাসিক ও বাণিজ্যিক ইন্টেরিয়র ডিজাইনের চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। 17
  • টেকসই ডিজাইনের চাহিদা: পরিবেশবান্ধব, সাশ্রয়ী এবং কার্যকর স্পেস ম্যানেজমেন্টের কারণে স্মার্ট ডিজাইন এখন মানুষের কাছে প্রাধান্য পাচ্ছে। 18
  • বাণিজ্যিক স্থানের বৃদ্ধি: হোটেল, রেস্টুরেন্ট, অফিস স্পেস বৃদ্ধির কারণে বাণিজ্যিক ডিজাইনের চাহিদা বাড়ছে। 19
  • ই-কমার্স ও রিটেইল ব্যবসার প্রসার: ই-কমার্স এবং রিটেইল ব্যবসার বৃদ্ধির সাথে সাথে শোরুম ডিজাইনের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে। 20
  • স্মার্ট হোম ও হোম অটোমেশনের চাহিদা: স্মার্ট লাইটিং, স্মার্ট লক, হোম থিয়েটার এবং স্মার্ট কিচেন ব্যবহারে মানুষের আগ্রহ বাড়ছে, যা নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করছে। 21

আইডেব আগামী এক বছরে ডিজাইনারদের জন্য বিনামূল্যে বা ন্যূনতম খরচে স্কিল ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্কশপ আয়োজন, ইন্টেরিয়র ডিজাইনার রেজিস্ট্রেশন নীতিমালা তৈরির জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাবনা, ইন্টেরিয়র ডিজাইনকে এসএমই খাতের আওতায় আনার জন্য পলিসি লবিং, ক্লায়েন্ট সচেতনতায় “No Free Design” অনলাইন ক্যাম্পেইন এবং সাসটেইনেবল ও স্মার্ট ইন্টেরিয়র ডিজাইন নিয়ে আন্তর্জাতিক সেমিনার আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে। 22

উপসংহারে, ইন্টেরিয়র ডিজাইন খাতের বর্তমান সমস্যা এবং সম্ভাবনার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সময় এসেছে। আইডেব-এর মতো সংগঠনগুলো সরকারের সহযোগিতা পেলে এই খাত দ্রুত একটি টেকসই, সুন্দর এবং আধুনিক বাংলাদেশের অংশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। 23