বুধবার ৩ ডিসেম্বর, ২০২৫
সর্বশেষ:
খালেদা জিয়াকে ভিভিআইপি ঘোষণার সিদ্ধান্ত ডিভাইস শিল্পের বিনিয়োগ সুরক্ষা দেবে সরকার : ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বাজারে আসছে নতুন ৫০০ টাকার নোট, বৃহস্পতিবার থেকেই পাওয়া যাবে জননিরাপত্তা জোরদারে ডিজিটাল ও কমিউনিটি কৌশল গ্রহণের তাগিদ বিশেষজ্ঞদের বাংলাদেশ আমদানি বন্ধ রাখায় বিপাকে ভারত, সীমান্তে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি ২ রুপিতে! দেশের অর্থনীতি কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় পৌঁছায়নি, কাজ করার সুযোগ আছে: বাণিজ্য সচিব অবৈধ মাছ ধরা বন্ধে বৈশ্বিক সহযোগিতা জরুরি: মৎস্য উপদেষ্টা বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর অনুকূল পরিবেশ তৈরির তাগিদ ইইউর শাহরুখ খানের মার্কশিট ভাইরাল: কোন বিষয়ে কত নম্বর পেয়েছিলেন বলিউড বাদশা?

অর্থনীতিকে প্রাধান্য দিলে দেশ ভালো অবস্থানে থাকে: মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা: – বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেছেন যে, তার দল সবসময় অর্থনীতিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে এবং যখনই বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিল, তখনই দেশের অর্থনীতি সবচেয়ে বেশি প্রাণবন্ত ছিল।

শনিবার ঢাকায় একটি হোটেলে বাংলা দৈনিক বণিক বার্তা আয়োজিত ‘৪র্থ বাংলাদেশ ইকোনমিক সামিট ২০২৫’-এ বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এই মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল দেশের ব্যবসায়ীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের আহ্বান জানান। বিশেষত, তিনি গত ১৫ বছরে দুর্নীতির জন্য দায়ীদের কঠোরভাবে চিহ্নিত করার কথা বলেন।

তিনি বলেন, “ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের নিয়ে যে চিন্তা-ভাবনা, তা পরিবর্তন করতে হবে। গত ১৫ বছরে যারা লুটপাট, চুরি এবং ব্যাংক ডাকাতি করেছে, তাদের ধরুন। তাদের সাজা দিন।”

তবে তিনি এ ধরনের পদক্ষেপের একটি বড় পরিণতির দিকে ইঙ্গিত করেন। তিনি বলেন, “তাদের মালিকানাধীন শিল্প-কারখানায় হাজার হাজার মানুষ কাজ করে। সেগুলো বন্ধ করে দেওয়ায় ১৪ লাখ মানুষ বেকার হয়েছে।”

মির্জা ফখরুল নীতিনির্ধারকদের এই পদ্ধতি পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়ে প্রশ্ন করেন: “এই মানুষগুলো কোথায় যাবে? আমরা কেন এই বেকারত্ব সৃষ্টি করছি? আমাদের দেখতে হবে কীভাবে আমরা এই কারখানাগুলোকে পুনরায় চালু করতে পারি এবং এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে এই মানুষগুলোর জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারি।”

বিএনপি নেতা জোর দিয়ে বলেন যে, বর্তমানে তাদের দলের মূল মনোযোগ সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের দিকে।

তিনি বলেন, “আজকে আমরা যে বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিতে চাই, তা হলো—সাধারণ মানুষ যেন ভালো থাকে। আমাদের কৃষকরা যেন ভালো থাকেন, তাদের সমস্যার সমাধান হয়, আমাদের শ্রমিকরা যেন তাদের শ্রমের ন্যায্য মূল্য পান এবং অর্থনীতিতে যেন স্থিতিশীলতা থাকে।”

তিনি দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় অর্জনের কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে দেশের সাড়ে সাত কোটি জনসংখ্যার জন্য ২৮ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যের ঘাটতি ছিল, অথচ বাংলাদেশ এখন খাদ্যে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। সময়মতো কৃষকরা সার ও বীজ পেলে আরও বড় অর্জন সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।

বিএনপি মহাসচিব দলের ব্যাপক সংস্কারের প্রতিশ্রুতির পুনরাবৃত্তি করেন এবং দলের স্বাক্ষরিত ‘জুলাই চার্টার’-এর কথা উল্লেখ করেন।

তিনি মনে করিয়ে দেন যে, বিএনপি অনেক আগেই সংস্কারের জন্য বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছিল। তিনি বলেন, “২০১৬ সালে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০ দিয়েছিলেন। আজ আমরা যে বিষয়গুলিতে একমত, তার অনেক কিছুই সেখানে অন্তর্ভুক্ত ছিল। একইভাবে, ২০২৩ সালে আমরা ৩১-দফা দাবি দিয়েছিলাম, যেখানে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংস্কারের বিষয়গুলো রয়েছে।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীও অনুষ্ঠানে একটি সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেন। এতে তিনি বিএনপি পরবর্তী সরকার গঠন করলে তাদের অর্থনৈতিক সংস্কারের পরিকল্পনাগুলো তুলে ধরেন।

তিনি উপসংহারে বলেন, তাদের দলের সার্বিক লক্ষ্য সবসময়ই ছিল বাংলাদেশকে কেবল একটি নতুন জাতি হিসেবে নয়, বরং একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে দেখা।