ঢাকা: বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশের জলসীমায় ভারতীয় জেলেদের ইলিশ শিকারের খবর প্রকাশের পর সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বুধবার সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
সাভারে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই)-এ বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালার উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
ফরিদা আখতার বলেন, “ভারতীয় জেলেরা আমাদের জলসীমার মধ্যে ইলিশ মাছ ধরছে জানতে পেরে আমরা কোস্টগার্ডকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছি। ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে।”
উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, সরকার বাংলাদেশের মানুষের জন্য ইলিশের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। তিনি যোগ করেন, “আমরা চাই আমাদের দেশের মানুষ ইলিশ খাক। আমাদের সমুদ্রে অবৈধভাবে মাছ ধরা বন্ধে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।”
ইলিশ নিষেধাজ্ঞা ও জেলেদের চ্যালেঞ্জ
সরকার ইলিশ মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও দেশের বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে মাছ শিকার ও কেনাবেচার খবর স্বীকার করেন ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, “আমরা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করছি, কিন্তু কিছু এলাকায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা বিধিনিষেধ কার্যকর করতে গিয়ে জেলেদের হামলার শিকারও হয়েছেন।”
এছাড়াও, নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জন্য সরকার নিবন্ধিত সকল জেলেকে পর্যাপ্ত চাল সরবরাহ করতে পারেনি বলেও স্বীকার করেন তিনি।
গবেষণায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান
কর্মশালায় উপদেষ্টা গবেষকদের প্রতি আহ্বান জানান, তারা যেন তাদের প্রকল্প পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে গ্রামীণ নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বিবেচনায় রাখেন।
তিনি স্থানীয় পোল্ট্রি উৎপাদন বাড়ানোর গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং গবাদি পশুর খাদ্যে ক্ষতিকারক পদার্থ ব্যবহারের ওপর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ফরিদা আখতার সতর্ক করে বলেন, “যারা গবাদি পশুর খাদ্যে ট্যানারির বর্জ্য ব্যবহার করে, তারা দেশের শত্রু। এসব উপাদানে উচ্চমাত্রার ক্ষতিকর রাসায়নিক থাকে, যা ক্যান্সারসহ অন্যান্য মারাত্মক রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।”
অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব আবু তাহের মো. জাহের বলেন, মন্ত্রণালয় নিয়মিতভাবে গবেষণার বাজেট বৃদ্ধির জন্য অনুরোধ করে, তবে বরাদ্দকৃত তহবিল অবশ্যই সাধারণ মানুষের উপকারে আসতে হবে।