ঢাকা : ফার ইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের গ্রাহক ও কর্মচারীরা কোম্পানিটির তহবিল থেকে কথিত ৪,৫০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ উদ্ধারের দাবিতে রবিবার মানববন্ধন করেছেন। একই সঙ্গে তারা সাবেক চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলামসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
রবিবার ঢাকার সেগুনবাগিচায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কার্যালয়ের সামনে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। ক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীরা বিশেষ করে সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম এবং সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ খালেক এর বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার দাবি করেন।
মানববন্ধন শেষে তারা আত্মসাৎ করা অর্থ উদ্ধারের আহ্বান জানিয়ে এবং অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে অনুরোধ জানিয়ে দুদকের কাছে একটি আনুষ্ঠানিক স্মারকলিপি জমা দেন।
উল্লেখ্য, ৪৫ কোটি টাকা আত্মসাতের একটি মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত অভিযোগে ২৩ অক্টোবর গ্রেপ্তারের পর সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বর্তমানে আদালতের নির্দেশে পাঁচ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন।
মানববন্ধনে কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কামরুল হাসান বলেন, “আমরা আত্মসাৎ করা অর্থ ফেরত চাই।”
কোম্পানির পুনরুদ্ধার বিভাগের ইনচার্জ মাসুদ হোসেন অভিযোগ করেন, “নজরুল এবং খালেক নজিরবিহীন লুটপাটের মাধ্যমে ঐতিহাসিক ফার ইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্সকে ধ্বংস করেছেন। অভিযুক্ত চেয়ারম্যানরা টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। তারা আইনি ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। এটি একটি ইঁদুর-বিড়াল খেলা, আর আমরা ন্যায়বিচারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছি।”
আইন কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন দুদকের পদক্ষেপের প্রশংসা করে বলেন, “আমরা দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা এবং দুদকে অভিযোগ দায়ের করেছি। দুর্নীতিবাজ নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের জন্য আমরা দুদককে ধন্যবাদ জানাই।”
গ্রাহক ও কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন, ২০০০ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে পলিসি গ্রাহকদের অবদানে কোম্পানির তহবিল প্রায় ৪,০০০ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছিল। তবে সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ও এম এ খালেক নিজেদের লোক নিয়োগের মাধ্যমে ভুয়া ব্যয়, কাল্পনিক কাগজপত্রের বিনিয়োগ এবং ব্যবস্থাপনার কারসাজির মাধ্যমে কথিত এই অর্থ আত্মসাৎ করেন। এই অর্থের একটি বড় অংশ বিদেশে পাচার করা হয়েছে বলেও সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর ফলস্বরূপ, প্রায় ৪০ লাখ গ্রাহক তাদের প্রাপ্য টাকা পেতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
কোম্পানির সম্পদ ক্রয়ের নামে ৪৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ৩১ জুলাই নজরুল ইসলাম, সাবেক এমডি এবং আরও ২২ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুদকের উপ-পরিচালক সৈয়দ আতাউল কবির মামলা দায়ের করেছিলেন।