ঢাকা, ১৪ জুলাই : বিশ্বব্যাংক মন্তব্য করেছে যে বাংলাদেশের বর্তমান সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থা প্রায় এক বছর আগের তুলনায় “খুবই ভালো অবস্থায়” আছে। রোববার সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট জোহানেস জুট এই ইতিবাচক মন্তব্য করেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “বিশ্বব্যাংকের মন্তব্য হচ্ছে- বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থা এখন খুবই ভালো। প্রায় এক বছর আগে আমরা আশঙ্কা করেছিলাম, পরিস্থিতি আমাদের জন্য খুব কঠিন হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু এখন আমরা মনে করছি আমরা সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছি।”
জোহানেস জুট, যিনি সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের নতুন ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নয়াদিল্লি থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করবেন, তিনি বাংলাদেশের চলমান বিভিন্ন প্রকল্প ও বাজেট সহায়তা সম্পর্কে অবহিত আছেন। তিনি দেশের আর্থিক খাত, পেমেন্ট ব্যালেন্স এবং বৈদেশিক মুদ্রা খাতের উন্নত অবস্থা স্বীকার করেছেন। একইসাথে, জুট বেসরকারি খাতের বিকাশ এবং আরও বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) আকর্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি এও স্বীকার করেন যে অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো।
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, এক বছর আগে বাংলাদেশকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে বলে মনে করা হলেও বর্তমানে সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্বব্যাংক সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে।বৈঠকে আইএফসির কার্যক্রম সম্পর্কিত বিষয় এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে চাওয়া সব সহায়তা পেয়েছে বলেও আলোচনা হয়।
ড. সালেহউদ্দিন উল্লেখ করেন, আগামী অক্টোবর মাসে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ গ্রুপের বার্ষিক সভায় প্রত্যাশিত সহায়তার পরবর্তী ধাপ উত্থাপন করা হবে।আর্থিক খাতে, বিশেষ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) নেওয়া সংস্কার উদ্যোগে বিশ্বব্যাংক সন্তুষ্ট।
তারা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোর পুনর্গঠন শুরু এবং এনবিআরকে দুটি পৃথক সংস্থায় বিভাজনের সিদ্ধান্তের পূর্ণ বাস্তবায়ন দেখতে চায়, যদিও এতে কিছুটা সময় লাগবে। চট্টগ্রাম বন্দর এবং লালদিয়ায় কনটেইনার টার্মিনাল সম্পর্কেও আলোচনা হয়েছে এবং বিশ্বব্যাংক অবকাঠামো খাতে সহায়তা দিতে সম্মত হয়েছে।উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের নতুন ভাইস প্রেসিডেন্ট জোহানেস জুট শনিবার ঢাকায় এসেছেন। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে বিশ্বব্যাংক এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৬ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়েছে, যার বেশির ভাগই অনুদান বা স্বল্প সুদে ঋণ।