সোমবার ২৭ অক্টোবর, ২০২৫
সর্বশেষ:
হালাল পণ্য রপ্তানি বাড়াতে বাংলাদেশ-পাকিস্তান চুক্তি: বিএসটিআই সনদ পাবে পাকিস্তানে স্বীকৃতি জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী হলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বিলুপ্ত করবে বিএনপি: আমীর খসরু হবিগঞ্জ গ্যাস ফিল্ডের ৫ নম্বর কূপে ওয়ার্কওভার কাজ শুরু: উৎপাদন বাড়বে ১৫ মিলিয়ন ঘনফুট ডিসিসিআই আলোচনায় চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য ‘স্মার্ট মানবসম্পদ’ উন্নয়নে জোর মানব পাচার, অস্থিতিশীলতায় বাংলাদেশের পাসপোর্টের উপর বৈশ্বিক আস্থায় সংকট নির্বাচন ২০২৬: অবাধ, অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইসির বৈঠক ৩০ অক্টোবর ৪,৫০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ: ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্সের গ্রাহকদের টাকা উদ্ধারের দাবি<gwmw style="display:none;"></gwmw> মতিঝিল ও গুলশানে দেশের মোট ব্যাংক আমানতের ২০ শতাংশ, ভাসানটেকে সর্বনিম্ন শপথ নিলেন পেট্রোবাংলা অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত নেতৃত্ব

ডিসিসিআই আলোচনায় চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য ‘স্মার্ট মানবসম্পদ’ উন্নয়নে জোর

ঢাকা: অর্থনীতির দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রেক্ষাপটে টিকে থাকতে প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা এখন বাংলাদেশের জন্য সময়ের দাবি।

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা, কারিগরি প্রশিক্ষণ এবং শিল্প খাতের মধ্যে সমন্বয় জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাজধানীর ডিসিসিআই মিলনায়তনে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রেক্ষাপটে স্মার্ট মানবসম্পদ উন্নয়ন’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা সভায় এই আহ্বান জানানো হয়।

জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এনএসডিএ) নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরী এতে প্রধান অতিথি ছিলেন।

শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন ও চাকরি হারানোর ঝুঁকি, স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব শুধু প্রযুক্তিগত নয়, বরং উৎপাদন, ব্যবসা ও শ্রমবাজারে গভীর রূপান্তর এনেছে, যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এখন ব্যাপক প্রভাব ফেলছে।তিনি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের তথ্যের ভিত্তিতে জানান, আগামী পাঁচ বছরে বৈশ্বিক চাকরির বাজারের এক-চতুর্থাংশ পরিবর্তিত হবে।

এলডিসি-পরবর্তী প্রতিযোগিতামূলক অর্থনীতিতে টিকে থাকতে স্মার্ট ও প্রযুক্তিনির্ভর মানবসম্পদই হবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি। এ জন্য তিনি শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকায়ন, কারিগরি শিক্ষার সম্প্রসারণ এবং শিক্ষা-শিল্প খাতের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেন।

আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে যুক্তরাজ্যের রিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং অধ্যাপক ড. এম নিয়াজ আসাদুল্লাহ সতর্ক করেন: এটুআই ও ইউএনডিপি’র গবেষণায় দেখা গেছে, প্রযুক্তিনির্ভর অটোমেশনের কারণে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, খাদ্য, কৃষি, ফার্নিচার, পর্যটন ও হসপিটালিটি খাতে প্রায় ৫৩ লাখ ৮০ হাজার চাকরি ঝুঁকিতে পড়তে পারে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় মানবসম্পদকে প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ করে তুলতে প্রশিক্ষণ ও বাজেট বরাদ্দ বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।

এনএসডিএ’র আহ্বান: সরকারি-বেসরকারি সমন্বয় ও নারী দক্ষতা উন্নয়ন প্রধান অতিথির বক্তব্যে এনএসডিএ’র নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরী দক্ষতা উন্নয়নে সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের ঘাটতি এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে সচেতনতার অভাবকে বড় বাধা হিসেবে চিহ্নিত করেন।

তিনি জানান, জাপানসহ বিভিন্ন দেশে এক লাখ দক্ষ বাংলাদেশি কর্মী পাঠানোর লক্ষ্যে জাপানি ভাষা প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং নারীদের দক্ষতা উন্নয়নেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

তিনি এর চাহিদার সঙ্গে মানবসম্পদ উন্নয়ন কার্যক্রমকে সম্পৃক্ত করার পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব বাড়ানোর পরামর্শ দেন। অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের মতামত বুয়েটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাসরুর আলী প্রাথমিক স্তর থেকেই মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়ে বলেন, গ্রাম ও শহরের শিক্ষার মানের ব্যাপক বৈষম্য দূর করা না গেলে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা সম্ভব নয়।

আইসিএমএবি সভাপতি মাহতাব উদ্দিন আহমেদ জানান, দেশের শিক্ষার্থীদের মাত্র ২০ শতাংশ দক্ষতা অনুযায়ী চাকরি পায় এবং প্রায় ২০ লাখ বেকার রয়েছে। এই সংকট মোকাবিলায় কারিগরি শিক্ষা সম্প্রসারণ ও সমাজের মানসিকতা পরিবর্তন জরুরি।

ইষ্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শামস রহমান অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা শিল্প খাতের চাহিদা অনুযায়ী মানবসম্পদ তৈরি করতে পারছে না। শিক্ষা ও শিল্প খাতের যৌথ উদ্যোগ ছাড়া এই ঘাটতি পূরণ সম্ভব নয়।

ব্রেইন স্টেশন ২৩-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রাইসুল কবীর বলেন, এআই কর্মসংস্থান কমাবে না, বরং দক্ষতার ভিত্তিতে নতুন সুযোগ তৈরি করবে, তাই প্রশিক্ষণভিত্তিক মানবসম্পদ উন্নয়ন জরুরি।

মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে বিদেশে কর্মী পাঠানোর ওপর জোর দেন, যা রেমিট্যান্স আয়ে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে।