ঢাকা, ২৫ মে: বৈশ্বিক মেধাবীদের আকৃষ্ট করতে এক নতুন কৌশল গ্রহণ করেছে হংকং। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে, বিশেষ করে হার্ভার্ডে, বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিয়ে ক্রমবর্ধমান অনিশ্চয়তা এবং রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে হংকং ঘোষণা করেছে যে তারা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য তাদের দ্বার আরও উন্মুক্ত করবে। এই পদক্ষেপকে বৈশ্বিক শিক্ষা মানচিত্রে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করার একটি সুচিন্তিত প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।হংকংয়ের শিক্ষা সচিব ক্রিস্টিন চোই জোর দিয়ে বলেছেন, ‘বিশ্বের মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য আমাদের দরজা সর্বদা খোলা।
যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান পরিস্থিতিতে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, আমরা তাদের জন্য একটি বিকল্প পথ তৈরি করতে প্রস্তুত।’ তিনি আরও জানান, হংকংয়ের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যায় যে দীর্ঘদিনের সীমাবদ্ধতা ছিল, তা এখন শিথিল করা হয়েছে, যা আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য ভর্তির প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করবে।এই ঘোষণার পরপরই হংকং ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (HKUST) একটি তাৎপর্যপূর্ণ প্রস্তাব দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, যেসব শিক্ষার্থী হার্ভার্ডে অধ্যয়নরত ছিলেন বা সেখানে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিলেন কিন্তু বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন, তারা চাইলে HKUST-এ পড়ার সুযোগ পাবেন। বিশ্ববিদ্যালয়টি ভর্তি প্রক্রিয়াকে আরও সরল করার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ একাডেমিক সহায়তার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে।এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময়ে এসেছে যখন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ‘উগ্র উদারপন্থী চিন্তা’ ছড়ানো এবং ‘ইহুদি বিরোধিতায়’ জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছেন।
মার্কিন নিরাপত্তা দপ্তরের একজন কর্মকর্তা হার্ভার্ডকে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সম্পর্ক এবং ‘সহিংসতার উসকানি’র অভিযোগে জবাবদিহি করার কথা বলেছেন। তবে চীন এসব অভিযোগকে ‘রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ’ আখ্যা দিয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এমন পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করবে।বর্তমানে হার্ভার্ডে প্রায় ১ হাজার ৩০০ চীনা শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছেন, এবং যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার জন্য আরও বহু চীনা শিক্ষার্থী রয়েছেন।
হংকংয়ের এই উদ্যোগ কেবল তাদের জন্যই নয়, বরং বিশ্বজুড়ে যেসব শিক্ষার্থী পশ্চিমা দেশগুলোতে রাজনৈতিক কারণে অনিশ্চয়তার সম্মুখীন হচ্ছেন, তাদের জন্যও একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। এটি বৈশ্বিক শিক্ষাব্যবস্থায় ক্ষমতার ভারসাম্যে একটি সম্ভাব্য পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে, যেখানে এশিয়ার শিক্ষাকেন্দ্রগুলো নিজেদেরকে আরও শক্তিশালী বিকল্প হিসেবে তুলে ধরছে।