ঢাকা – তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসায়ীরা শিল্পে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা চেয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫) সন্ধ্যায় বাংলাদেশের পোশাক খাতের কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী বাংলাদেশ জামায়াত-ই-ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে তাঁর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসভবনে এক বৈঠকে মিলিত হন।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫) জামায়াত-ই-ইসলামী এবং ব্যবসায়িক নেতারা সাংবাদিকদের এই বৈঠকের খবর নিশ্চিত করেন। ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলে ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও স্কয়ার টেক্সটাইলসের চেয়ারম্যান তপন চৌধুরী, বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম এবং বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি ফজলে শামীম এহসান। জামায়াত-ই-ইসলামীর পক্ষ থেকে দলের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, সহকারী সম্পাদক আনোয়ারুল আজিম এবং জামায়াত নেতা ডা. খালিদুজ্জামান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। জামায়াত-ই-ইসলামীর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান ইউএনবিকে জানান, ব্যবসায়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চলমান আলোচনার অংশ হিসেবে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা এর আগে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছিলাম। জামায়াত আমীর এর আগে আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, কিন্তু তখন আমরা যেতে পারিনি, তাই এখন গিয়েছি।”
বৈঠকে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন, যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক (কাউন্টারভেইলিং ডিউটি) এবং শ্রম আইনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় বলে বিজিএমইএ সভাপতি জানান।
মোহাম্মদ হাতেম বলেন, “আমরা জামায়াত-ই-ইসলামীর আমীরকে বিভিন্ন বিষয়ে অবহিত করেছি। বিশেষ করে জোর করে শ্রম আইন কার্যকর করা হলে যে সমস্যা হবে, সে বিষয়ে আমরা তাকে বলেছি। এছাড়া এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের সময়সীমা বাড়ানো না হলে আমরা যেসব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ব, সে বিষয়েও আমরা তাকে জানিয়েছি।” তিনি আরও বলেন, কারখানায় প্রায়ই শ্রম পরিবেশ বিঘ্নিত হয়। এই পরিস্থিতিতে শ্রমিক এবং শিল্পের স্বার্থ রক্ষায় রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা চেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। হাতেম যোগ করেন, “জামায়াত-ই-ইসলামীর আমীর মনোযোগ সহকারে আমাদের কথা শুনেছেন এবং অনেক বিষয়ে আমাদের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন।”
জামায়াত-ই-ইসলামীর প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, বৈঠকে বাংলাদেশের শিল্প ও বাণিজ্যিক সম্ভাবনা, নতুন বিনিয়োগ, বিনিয়োগের পরিবেশ এবং সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ, বিশেষ করে ‘শ্রম আইন ২০২৫’ নিয়ে আলোচনা হয়। ব্যবসায়ীরা দেশের কারখানাগুলোতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং সামগ্রিক সহযোগিতা প্রদানে সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানান। জবাবে জামায়াত আমীর শিল্পকে রক্ষা এবং অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখার জন্য শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক উন্নয়নের উপর গুরুত্বারোপ করেন।