মঙ্গলবার ২১ অক্টোবর, ২০২৫
সর্বশেষ:
ঢাকা বিমানবন্দর কার্গো ভিলেজ আগুন: রপ্তানিকারকদের ১ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির আশঙ্কা শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আগুন ২৭ ঘণ্টা পর নিভল, কাঠামো ঝুঁকিপূর্ণ: এফএসসিডি ঋণ অবলোপনে নতুন নীতিমালা, ৩০ দিন আগে নোটিশ দেওয়া বাধ্যতামূলক করল বাংলাদেশ ব্যাংক শাহজালাল বিমানবন্দরে আগুনে পোশাক শিল্পের কাঁচামাল ও গুরুত্বপূর্ণ স্যাম্পল ধ্বংস: বিজিএমইএ ইউএনবি’র সেমিনার: ব্যাংকে আমানতকারীদের অধিকার সুরক্ষায় দক্ষ ও পেশাদার পরিচালক নিয়োগের তাগিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস পালিত ২৫ দলের সনদ স্বাক্ষর: অংশ নিলেন না জুলাই আন্দোলনের প্রধান দল এনসিপি ও বামপন্থীরা সুর ও ছন্দে ঢাবি চারুকলার বকুলতলায় শরৎ উৎসব উদযাপন ইসলামি ব্যাংকিংয়ে সুশাসন বাড়াতে ‘শরিয়াহ উপদেষ্টা বোর্ড’ গঠন করছে বাংলাদেশ ব্যাংক

নয়টি নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) বিলুপ্ত করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক

নয়টি নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) বিলুপ্ত করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক, কারণ হিসেবে দুর্বল সম্পদ গুণমানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে আমানতকারীদের সুরক্ষা এবং আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এমন কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, এই প্রক্রিয়াটির জন্য সরকার নীতিগতভাবে অনুমোদন দিয়েছে।

তিনি আরও জানান, “আমরা শুধুমাত্র আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য এই প্রক্রিয়া নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। তাদের টাকা ফেরত নিশ্চিত করাই হবে আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার।”দেশের আর্থিক খাতের এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময়ে এলো যখন খাতটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, যার মধ্যে খেলাপি ঋণের উচ্চ হার অন্যতম।

এই সংকটের কারণে বেশ কিছু দুর্বল ব্যাংককে একীভূত করার পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। এটি এনবিএফআই খাতে দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা এবং গভীর অস্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দেয়।

পলিসি এক্সচেঞ্জ, বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এবং বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক অর্থনীতিবিদ ড. মাসরুর রিয়াজ বলেন, যদিও এই উদ্যোগটি আর্থিক খাতের জন্য একটি “বড় ধাক্কা”, তবে বিকল্প সীমিত। তিনি বলেন, “সম্পদের গুণগত মান বিবেচনা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সঠিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।” তার মতে, এই পদক্ষেপ ভবিষ্যতে সংস্কারের অনুঘটক হিসেবে কাজ করতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের শেষে এনবিএফআই খাতের মোট খেলাপি ঋণের ৭৩.৫ শতাংশ মাত্র ১২টি প্রতিষ্ঠানের কাছে কেন্দ্রীভূত ছিল। প্রাথমিকভাবে ২০টি প্রতিষ্ঠানকে “রেড ক্যাটাগরি” তে রাখা হয়েছিল। এ বছরের জানুয়ারিতে এসব প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ব্যাখ্যা চাওয়ার পর, নয়টির উত্তর সন্তোষজনক না হওয়ায় সেগুলোকে বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিলুপ্তির জন্য চিহ্নিত নয়টি প্রতিষ্ঠান হলো: ফার্স্ট ফাইন্যান্স, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি), প্রিমিয়ার লিজিং, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, জিএসপি ফাইন্যান্স, প্রাইম ফাইন্যান্স, আবিভা ফাইন্যান্স, পিপলস লিজিং, এবং ইন্টারন্যাশনাল লিজিং। এই প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘ সময় ধরে খেলাপি ঋণ এবং আর্থিক অনিয়মের কারণে ভুগছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের শেষে এনবিএফআই খাতে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২৫,০৮৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রায় ৫২ শতাংশ, বা অর্ধেকের বেশি খেলাপি ঋণ এই নয়টি প্রতিষ্ঠানের।বিশ্লেষকরা এই সিদ্ধান্তকে বাংলাদেশের আর্থিক খাতের জন্য একটি “ঐতিহাসিক মুহূর্ত” বলে অভিহিত করছেন। তাদের বিশ্বাস, এই নয়টি এনবিএফআই বিলুপ্তির মাধ্যমে শুধু দুর্দশাগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর পতনই নয়, বরং পুরো খাতের একটি বড় ধরনের পুনর্গঠনের সূচনা হতে পারে।