ঢাকা, এপ্রিল ২৪: যশোর-৩ আসনের প্রাক্তন সংসদ সদস্য এবং জেমকন গ্রুপের অন্যতম মালিক কাজী নাবিল আহমেদ, তার পরিবারের সদস্য এবং তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা মোট ৩৬২.৪৩ একর জমি, ঢাকার সাতটি ফ্ল্যাট এবং জমি সহ বেশ কয়েকটি বাড়ি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এছাড়াও, তার ভাই কাজী আনিস আহমেদের যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত একটি কোম্পানির বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগও জব্দ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিব দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন। দুদকের চলমান অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে সংস্থাটির উপ-পরিচালক রেজাউল করিম এই সম্পত্তি জব্দ ও বিনিয়োগ জব্দের জন্য আদালতে আবেদন করেছিলেন।
বাজেয়াপ্ত করা সম্পত্তির মধ্যে কাজী নাবিল আহমেদের নামে রয়েছে পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়ায় ৩৪.৬৩ একর, বোদা উপজেলায় ২৫.৫৫ একর, পঞ্চগড় সদরে ১০.০৮ একর, খুলনায় ২৪৬ একর, রুপসায় ২৬.৫১ একর জমি এবং ঢাকার ধানমন্ডিতে ১১ শতক জমির উপর নির্মিত ছয়তলা ভবনের এক-তৃতীয়াংশ, মোহাম্মদপুরে দুটি প্লট ও গুলশানে একটি ফ্ল্যাট।
এছাড়াও, কাজী নাবিলের পিতা মৃত কাজী শাহেদ আহমেদের বাজেয়াপ্ত সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে ঢাকার ধানমন্ডিতে ১৬.৫০ শতাংশ জমির উপর নির্মিত ছয়তলা ভবন ও যশোরে জমি সহ একটি দোতলা বাড়ি। যশোরের কাজীপাড়ায় ১৫.৯৮ একর জমি এবং কক্সবাজারের টেকনাফে ২.২৪ একর জমিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
কাজী নাবিলের মাতা আমিনা আহমেদের নামে বাজেয়াপ্ত সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে ধানমন্ডির তিনটি ফ্ল্যাট ও কক্সবাজারের সেন্টমার্টিনে ১.৪৪ একর জমি। একইসাথে, কাজী নাবিলের ভাই কাজী আনিস আহমেদের নামে ধানমন্ডিতে ১১ শতক জমির উপর নির্মিত ছয়তলা বাড়ির এক-তৃতীয়াংশ ও গুলশানের একটি ফ্ল্যাট বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
কাজী নাবিলের আরেক ভাই কাজী ইনামের নামে ধানমন্ডিতে ১১ শতক জমির উপর নির্মিত ছয়তলা ভবনের এক-তৃতীয়াংশ এবং ধানমন্ডি ও গুলশানে অবস্থিত আরও দুটি ফ্ল্যাট বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
অন্যদিকে, একই আদালত যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগকৃত কাজী আনিস আহমেদের ৬১ লাখ ৩৯ হাজার ৩১ মার্কিন ডলার মূল্যের শেয়ার (যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭৪ কোটি ৯৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা) অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন।
জানা গেছে, কাজী নাবিল আহমেদের এই অর্থ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান AGNETA LLC-তে বিনিয়োগ করা হয়েছে। এই বিনিয়োগের জন্য তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেননি।
এর আগে, গত ১৩ মার্চ কাজী নাবিল আহমেদ, তার পিতা মৃত কাজী শাহেদ আহমেদ, মাতা আমিনা আহমেদ, দুই ভাই কাজী আনিস আহমেদ, কাজী ইনাম এবং তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ৩৬টি কোম্পানির ৪ কোটি ২৬ লাখ ৬ হাজার ৮৬৮টি শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেয় আদালত। এসব শেয়ারের অভিহিত মূল্য ৬০ কোটি ৪৪ লাখ ৬৮ হাজার টাকা।
তারও আগে, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি কাজী নাবিল আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ৮৩টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছিল আদালত।