শুক্রবার ওয়ান ফার্মা কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা বর্তমানে তিনটি দেশে ওষুধ সরবরাহ করছে এবং আরও কয়েকটি দেশে রপ্তানি শুরুর প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন। একই সাথে, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বাজারে কৃষিপণ্য রপ্তানিরও আগ্রহ দেখাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
ওয়ান ফার্মা ও এগ্রিকেয়ারের চেয়ারম্যান নাজমুন নাহার বলেন, “আমরা দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারেও ওষুধ রপ্তানি করছি। আমাদের নিজস্ব প্রযুক্তিতে উৎপাদিত ওষুধ আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশের বাজারে সুলভ মূল্যে সরবরাহ করা হচ্ছে, যা মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।”
ওষুধ শিল্পে একটি নতুন মাইলফলক স্থাপন করতে, ওয়ান ফার্মা ক্যান্সার রোগের জন্য অত্যাধুনিক বায়োটেক ওষুধ তৈরির প্লান্ট স্থাপন করছে। ইতোমধ্যে কিছু যন্ত্রপাতি এসে পৌঁছেছে এবং আরও কিছু আমদানির পথে রয়েছে। এই উদ্যোগ সফল হলে, দেশে সাশ্রয়ী মূল্যে ক্যান্সারের ওষুধ সরবরাহ করা সম্ভব হবে এবং আন্তর্জাতিক বাজারেও রপ্তানির সুযোগ তৈরি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন চেয়ারম্যান নাজমুন নাহার।
কোম্পানিটি জানায়, ২০১৫ সালে বগুড়ার বিসিক শিল্পনগরীতে তাদের ওষুধ কারখানা স্থাপিত হয়। বর্তমানে এই কারখানায় ২০০ জন শ্রমিক কাজ করছেন এবং এখানে শতাধিক জেনেরিক ওষুধ উৎপাদিত হচ্ছে।
ওয়ান ফার্মার প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা ইশতিয়াক আহমেদ জানান, তারা ২০১৮ সাল থেকে ওষুধ রপ্তানি শুরু করেছেন। ২০২৪ সালে আফগানিস্তানে ২ মিলিয়ন ডলারের ওষুধ রপ্তানি হয়েছে এবং চলতি বছরে ৩ মিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আদেশ পাওয়া গেছে। মিয়ানমারে রপ্তানির পরিমাণ ৫০ হাজার ডলার।
তিনি আরও বলেন, “আমরা ১০০টি দেশে ওষুধ রপ্তানির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। বর্তমানে আমাদের বার্ষিক আয় ১৫০ থেকে ১৮০ কোটি টাকা। গত বছর আমাদের প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬১ শতাংশ।”
বর্তমানে আফগানিস্তান ও মিয়ানমারে ওষুধ রপ্তানি করা হচ্ছে এবং শ্রীলঙ্কা থেকেও রপ্তানির আদেশ এসেছে। এই তিনটি দেশে বর্তমানে রপ্তানি কার্যক্রম চলমান। ক্যান্সারের ওষুধ উৎপাদন শুরু হলে, ওয়ান ফার্মা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও প্রবেশ করতে পারবে বলে আশাবাদী প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতির তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সারাদেশে ২৬৯টির বেশি ছোট-বড় ওষুধ কারখানা রয়েছে, যার মধ্যে ১৬৪টি নিয়মিতভাবে ওষুধ উৎপাদন করছে। এই কারখানাগুলোতে প্রায় ৫ হাজার ব্র্যান্ডের ৮ হাজারের বেশি ওষুধ তৈরি হচ্ছে।
ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার গ্রুপের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান হলো ওয়ান ফার্মা। এই গ্রুপের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন নাজমুন নাহার। ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার ২০০২ সালে দেশের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করে এবং তখন থেকেই উন্নত মানের দেশি বীজ সরবরাহ করে আসছে। বর্তমানে কোম্পানিটি ধান, ভুট্টা ও সবজির উচ্চ ফলনশীল বীজ উৎপাদন করে বাজারে বিক্রি করছে।
কোম্পানির হেড অব বিজনেস ডেভেলপমেন্ট আবুল হাসান জানান, “আমরাই প্রথম স্পেলেন্ডার ব্র্যান্ডের ওয়াটার ডিসপোজাবল গ্রানুলার কীটনাশক বাজারে এনেছি। পাউডারমুক্ত হওয়ায় এটি ব্যবহারে কোনো ঝুঁকি নেই, তাই কৃষকরা নিরাপদে এই কীটনাশক ব্যবহার করতে পারছেন।”